দাপটের সঙ্গে বলিউড শাসন করেছে এমন এক পরিবার ছিল তাঁর মামাবাড়ি। নিজেও অভিনয় করেছেন সুনামের সঙ্গে। মডেল হিসেবেও ছিলেন জনপ্রিয়। কিন্তু সময়ের আগেই ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিদায় নেন অশোককুমারের নাতনি, অনুরাধা পটেল।
অনুরাধার জন্ম ১৯৬১ সালের ৩০ অগস্ট। তাঁর মা ভারতী অভিনেতা অশোককুমারের বড় মেয়ে। ভারতীর প্রথম স্বামী ছিলেন বীরেন্দ্র পটেল। তাঁদের দুই সন্তান, অনুরাধা এবং রাহুল। বোন অনুরাধার মত রাহুল অভিনেতা হননি। তিনি একজন ফ্যাশন ফোটোগ্রাফার।
অনুরাধার জন্মের কিছু পরেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় বীরেন্দ্র এবং ভারতীর। বিচ্ছেদের পরে ভারতী বিয়ে করেন হামিদ জাফরিকে। তাঁদের ছেলে সাহিল প্রখ্যাত থিয়েটার ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয় বিয়ের পরে ভারতী তাঁর নামের পরে ‘জাফরি’ পদবি ব্যবহার করলেও অনুরাধা পরিচয় হিসেবে রেখেছেন ‘পটেল’ পদবি-ই।
ভারতীও অভিনয় করেছেন কিছু সিনেমায়। তাঁর অভিনীত ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দমন’ এবং ‘হাজার চুরাশি কি মা’।
ভারতীর মেয়ে সুন্দরী, সপ্রতিভ অনুরাধার কাছে অভিনয়ের সুযোগ আসতে দেরি হয়নি। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি ‘লভ ইন গোয়া’। বিপরীতে নায়ক ছিলেন নবাগত ময়ূর বর্মা।
আশির দশকে বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেন অনুরাধা। ‘উৎসব’, ‘সদা সুহাগন’, ‘ইজাজত’, ‘রুখসত’-এর মতো ছবি তাঁর নামের পাশে যোগ হয়।
অনুরাধার ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘জান কি বাজি’, ‘দয়াবান’, ‘মেরা নসিব’, ‘তোফা মোহব্বত কা’, ‘জেন্টলম্যান’, ‘দশ কহানিয়া’, ‘জানে তু ইয়া না জানে না’ এবং ‘রেডি’। অভিনয় করেছেন বাংলা ছবি ‘জ্য়োতি’-তেও।
সিনেমার পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন টেলিভিশনেও। ‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’ এবং ‘দেখো মগর প্যায়ার সে’ মেগা সিরিয়ালে অনুরাধার অভিনয় দর্শকমনে দাগ কাটে।
জীবনের প্রথম ছবির নায়ক ময়ূর বর্মার সঙ্গে অনুরাধার সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কেরিয়ারের মাঝপথেই অনুরাধা বিয়ে করেন অভিনেতা কানওয়ালজিৎকে। তাঁদের আলাপ অভিনয়সূত্রেই।
কানওয়ালজিৎ-অনুরাধার দুই ছেলে, সিদ্ধার্থ এবং আদিত্য। বিয়ের পরে নয়ের দশকে গোড়ায় অভিনয় ছেড়ে দেন অনুরাধা। প্রায় এক দশক পরে তিনি আবার ফিরে আসেন ইন্ডাস্ট্রিতে। ২০০৩-এ মুক্তি পায় তাঁর ছবি ‘তুঝে মেরি কসম’। অনুরাধার শেষ ছবি ‘রব্বা ম্যায়ঁ ক্যায়া করু’ মুক্তি পেয়েছে ২০১৩-এ।
মূলত সংসারের জন্য অভিনয় ছেড়ে দেন তিনি। তবে অনুরাধা কিন্তু মডেলিং করে গিয়েছেন। বেশ কিছু নামী পণ্যের বিজ্ঞাপনে পরিচিত মুখ তিনি।
অভিনেত্রী অনুরাধা একটি সংস্থার কর্ণধার। তাঁর সংস্থায় গ্রুমিং করা হয় নবাগতদের। পাশাপাশি তিনি ছবিও আঁকেন। তবে নিজেকে চিত্রশিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতে চান না। বলেন, তাঁর নিজস্ব কোনও নির্দিষ্ট ঘরানা নেই। ছবি আঁকা তাঁর নিছক শখ। (ছবি: আর্কাইভ এবং ফেসবুক)