গৌরব চক্রবর্তীর সঙ্গে সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
পাহাড় থেকে ভূত নেমে এসেছে শহরে! খোদ কলকাতার বুকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘গেনু’, ‘নিকষ ছায়া’! ভূত চতুর্দশীতে অপদেবতার উপদ্রব কমাতে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ফের ময়দানে ‘ভাদুড়ি মশাই’ চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। সঙ্গী তাঁর দলবল সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী, অনিন্দিতা বসু, অর্ণ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার দফতরে সোমবার সন্ধ্যায় এই দলের দুই সদস্য গৌরব আর সুরঙ্গনার মুখোমুখি আনন্দবাজার অনলাইন।
এ বার কি ভূত আপনাকে রেহাই দিয়েছে? প্রশ্ন রাখামাত্র মিষ্টি হাসি অভিনেত্রীর। জানালেন, সেই জন্যই এ বার তিনি ভূত দমনের অভিযানে। কোনটা বেশি কঠিন, ‘ভূতে ধরা’? নাকি ‘ভূত ধরা’? জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। সুরঙ্গনার কথায়, “আমার মতে, দুটোই। নিজে কোনও দিন ভূত দেখিনি। ফলে, অশরীরীর অস্তিত্ব নিয়ে যথেষ্ট সন্দিগ্ধ। কিন্তু এই জ়ঁরের ছবি, সিরিজ় দেখতে বা তাতে অভিনয় করতে খুব ভাল লাগে। পরমব্রতদার প্রথম ভৌতিক সিরিজ়ের প্রথম থেকে রয়েছি সেই আনন্দেই।” তাঁর মতে, প্রথম বার ‘ভুতে পাওয়া’ চরিত্রের ক্ষেত্রেও তিনি চিত্রনাট্য মেনে, পরিচালকের কথা শুনে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। এ বারেও তাই।
পর্দায় তাঁর হবু স্বামী গৌরব। পেশায় পুলিশ। সুরঙ্গনা যখন বলছিলেন, তিনি ঠোঁটে মৃদু হাসি রেখে পাশেই বসে। পুলিশ কোনও দিন ভূত ধরতে পেরেছে? প্রশ্ন রাখতেই এ বার তাঁর হাসির পালা। “দেখুন, আমার মনে হয়, সব কাজ কারও পক্ষেই করে ওঠা সম্ভব হয় না। পুলিশের পক্ষেও নয়। তবে, পুলিশ কিন্তু চেষ্টা করেছে।” তার পরেই রসিকতা, “যদিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ‘ভূতে উপদ্রব করছে’ বলাটা যে কতটা চাপের, সেটা অভিনয় করতে করতে বুঝেছি।” বাস্তবে যদি ঋদ্ধিমা ঘোষের সঙ্গে এমন ঘটত? শুনেই টানটান হয়ে বসেছেন, “ও বাবা! খুব ভয়ানক কিছু হত তা হলে।” এ-ও জানিয়েছেন, ছেড়ে যেতেন না। পর্দার মতো বাস্তবেও প্রেমিকা বা স্ত্রীর পাশে থাকতেন।
বাংলায় ভূতের ছবি, ধারাবাহিক, সিরিজ়ের সংখ্যা হাতেগোনা। বলিউড এবং হলিউডে এই ঘরানার কাজ বেশি। কমন ফ্যাক্টর, কেবল মেয়েদেরই ভূতে ধরে! কেন? অবশ্যই ব্যতিক্রম ‘স্ত্রী’। প্রশ্নটা যেন লুফে নিলেন সুরঙ্গনা। “না না, এখানে নারী-পুরুষের বিভেদ না আনাই ভাল। আমাদের প্রথম পর্বের গল্পে এক মেয়ের উপরেই ভূত ভর করেছিল। এ বারের পর্বে কিন্তু পুরুষ ভূত রয়েছে, ‘গেনু’।” বলতে না বলতেই অভিনেত্রীর দিকে গৌরবের ইশারা, “আরে! গল্পটাই বলে দিচ্ছ যে!” তিনি হাল ধরে জানালেন, ভূতের এ রকম কোনও পক্ষপাতিত্ব নেই। সিরিজ় দেখলেই দর্শকেরা বুঝবেন।
পাহাড়ি পরিবেশ যথেষ্ট থমথমে। সেখানে শুটিং করতে গিয়ে যদিও বা গা ছমছম করে, শহরে কি সে সব কিছু হয়েছে?
প্রশ্ন ছিল উভয়ের কাছেই। সুরঙ্গনার দাবি, “ভূতে বিশ্বাস করি না, ভূতকে ততটাও ক্ষতিকারক বলে মনে হয় না। যতটা মানুষকে মনে হয়।” তাঁর মতে, হয়তো পাহাড়ি পরিবেশ থমথমে তার নিস্তব্ধতার জন্য। কলকাতার বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, ভয় যদি কোথাও থেকে থাকে, তা হলে সেটা এই শহরেই। এই শহরকে, শহরের মেয়েদের তাই তিনি ভয়মুক্ত দেখতে চান। একই সুর গৌরবের কথাতেও। তিনিও চান, তাঁর পরিবারের প্রত্যেকের মতোই শহরের সমস্ত নারী নিরাপদে থাকুন। অবাধ গতিবিধি হোক তাঁদের, ভাল থাকুন তাঁরা।
হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে ৩১ অক্টোবর মুক্তি পাচ্ছে ‘নিকষ ছায়া’। দুই অভিনেতাই দাবি, “নতুন পর্ব দর্শকদের আরও ভাল লাগবে। চিরঞ্জিৎ জেঠু তো আছেনই। তিনি থাকা মানে প্রচুর গল্প, নানা বিষয় নিয়ে আড্ডা। আবার কাজের সময় নানা পরামর্শ। তা ছাড়াও আছেন এক জন...” বলেই মুখ চাওয়াচাওয়ি তাঁদের। কে তিনি? মুখে কুলুপ আঁটার আগে জানালেন, এই রহস্য পর্দার জন্য তোলা থাক।