ভাল অভিনয় করার পরেও কাজ পাননি। কখনও আবার বহিরাগত তকমা দিয়ে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কখনও আবার স্বজনপোষণের শিকার হয়ে অভিনয়ের সুযোগ হারিয়েছেন। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে কেউ আত্মহত্যা করেছেন, কেউ আবার মানসিক অবসাদে চলে গিয়েছেন। ফ্রেডি দারুওয়ালা তেমনই এক জন প্রতিভাবান অভিনেতা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরেও বলিউড যাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
সলমন খান, অক্ষয় কুমারের মতো বড় তারকার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ‘হলিডে’, ‘ফোর্স-২’, ‘কম্যান্ডো-২’, ‘রেস থ্রি’-র মতো ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শকদের মন কেড়েছেন। ফ্রেডি দারুওয়ালা প্রশংসা কুড়িয়েছেন বলিউডেও।
২০০৭-এ ‘মিস্টার ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড’-এর খেতাবও জেতেন তিনি। তবে অভিনয় করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।
মডেলিং করতে করতেই ডাক পান বলিউডে। ২০১৪-তে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে তাঁর প্রথম ছবি ‘হলিডে’। এই ছবিতে নেগেটিভ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শকদের মন কেড়েছেন তিনি। তার পর ‘ফোর্স-২’, ‘কম্যান্ডো-২’ এবং ‘রেস-৩’-র মতো ছবিতেও অভিনয় করেন। গুজরাতি ছবি ‘সূর্যাংশ’তে তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছে।
এক সাক্ষাত্কারে ফ্রেডি জানান, তিনিও স্বজনপোষণেরর শিকার হয়েছিলেন। কাজ পাচ্ছিলেন না। আর সেই পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে অবসাদ গ্রাস করতে শুরু করেছিল তাঁকে।
স্বজনপোষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটা সময় এমন মনে হচ্ছিল যে এই কাজটাই আমার জন্য নয়। কিন্তু তা বলে তো হাল ছেড়ে দেওয়া যায় না। গুজরাতি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও স্বজনপোষণ আছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।”
ফ্রেডি আরও জানান, ‘হলিডে’ ছবি করার পর তার হাতে কোনও কাজ ছিল না। যত দিন যাচ্ছিল হতাশা ঘিরে ধরছিল। দু’বার চেষ্টা করেছিলন সব কিছু ছেড়ে দিতে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে নিজের মোটরসাইকেলটাও বিক্রি করে দিতে হয়েছিল।
ফ্রেডি বলেন, “এক দিকে হাতাশা কুরে কুরে খাচ্ছিল। অন্য দিকে নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম, ভালবেসেই অভিনয়ের কাজে এসেছি। এত সহজে হাল ছাড়লে চলবে না।”
আর্থিক ও মানসিক ভাবে সময় খারাপ আসতেই পারে। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে আমরা যদি একে অপরকে সাহায্য করি, তা হলে সেই পরিস্থিতিটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সাক্ষাত্কারে এমনটাই বলেছেন ফ্রেডি।
অবসাদ যে একটা ভয়ানক অসুখ, সেটা একবাক্যে স্বীকার করেছেন ফ্রেডি। তিনি বলেন, “আমার অনেক বন্ধুই অবসাদে ভুগছেন। সুশান্ত সিংহের মৃত্যুর পর বিষয়টি আরও প্রকাশ্যে এসেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকাল মানুষ এত ব্যস্ত যে অনেকে অবসাদের দিকে খেয়ালই রাখেন না। শুধু অভিনেতারাই নয়, সাধারণ মানুষও এর শিকার। তবে খুব যত্নের সঙ্গে নজর দিলে ডিপ্রেসন থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব।”
তাই লড়াই করে চলেছেন ফ্রেডি। অবসাদকে হারিয়ে বলিউডে ভাল কাজ করতে চাইছেন তিনি। পাশাপাশি কাজ করতে চান আঞ্চলিক সিনেমাতেও।