অর্ণব মিদ্যার ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ছবিতে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
তিনিও মেয়ের বাবা। কিন্তু ‘একাকি বাবা’ নন। ‘একা বাবা’র জীবন তাই তাঁরও জানা ছিল না। সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে সম্প্রতি। পরিচালক অর্ণব মিদ্যার ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ ছবিতে। এই ছবিতে তিনি রুক্মিণী মৈত্রের ‘একাকি বাবা’। বাবার একাকিত্ব যাঁকে ছুঁয়ে যায় প্রতি মুহূর্তে।
সদ্য ছবির শুটিং শেষ। পর্দায় ‘একাকি বাবা’র সফর কেমন ছিল? যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কারণ, সাধারণত ‘একাকি মায়েরা’ বেশি চর্চিত। চিরঞ্জিতের কথায়, “মায়ের মতোই একা বাবার জীবন যথেষ্ট কষ্টের, কঠিন। একা হাতে সন্তান প্রতিপালন সহজ নয়। একই ভাবে সঙ্গীহীন হয়ে বেঁচে থাকাও। যে কারণে বাবার ঘর থেকে মায়ের ছবি নিয়ে যাওয়ার পরেও সেই ছবি মেয়ে আবার ফিরিয়ে দিয়ে যায়।”
সমাজ একুশ শতকের মাঝামাঝি। তবু একা মা অথবা বাবা যদি দ্বিতীয় বার বিয়ের কথা ভাবেন অনেক ক্ষেত্রেই তাঁকে সমাজ কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। নারীর ক্ষেত্রে সেই দিকটি বেশি। একজন পুরুষ কি তুলনায় অনায়াসে সংসার বসাতে পারে? চরিত্র হয়ে উঠতে গিয়ে চিরঞ্জিৎ বুঝেছেন, “তুলনায় সহজ। কারণ, নারীর উপরে আরোপিত বাধানিষেধের পরিমাণ বেশি। পুরুষেরা সেই তুলনায় ছাড় পান।” অভিনেতা এ-ও জানিয়েছেন, তার মানেই সব পুরুষ দ্বিতীয় বার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চান, এমনও নয়। অনেক বাবা যেমন মেয়ের মুখ চেয়ে বিয়ে করতে চান না। যদিও পরে তা সন্তানের মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় সে-ও বিয়ে করতে চায় না। ছবিতে দেখা যাবে অঞ্জনা বসুকে।
পর্দার বাবা-মেয়ে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, রুক্মিণী মৈত্র। ছবি: সংগৃহীত।
বাঙালি যতই আধুনিক হোক, এখনও স্নেহ-মায়ায় জড়িয়ে থাকতে ভালবাসে। এই ছবি করতে গিয়ে চিরঞ্জিতের কি মেয়েকে মনে পড়েছে? কিংবা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-শ্রাবন্তী মজুমদারের গাওয়া গান ‘আয় খুকু আয়’?
প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। তাঁরও কথায় অপত্য স্নেহের আভাস, “মেয়ের কথা কমবেশি সব সময়েই মনে পড়ে। বিদেশে সংসারী। ভাল আছে জানি। যাই আমরা ওর কাছে। তবু সন্তান মা-বাবার কাছে সব সময়েই ছোট। ফলে, অভিভাবকদের চিন্তা থাকেই।” স্বীকার করে নিয়েছেন, জনপ্রিয় গানের মতোই ছবি জুড়ে বাবা-মেয়ের চিরকালীন সম্পর্ক। যদিও মেয়েকে নিজের পথে এগিয়ে দিতে অতটাও মোলায়েম ব্যবহার করেন না তিনি। চিরঞ্জিতের আরও দাবি, “এই প্রজন্ম কিন্তু উদারচেতা। মা বা বাবা একা থাকবে— মানতে পারে না। দরকারে তারা তাঁদের বিয়ে দিয়ে তার পর বিয়ের পিঁড়িতে বসে।”