আমির আলি।
বিজ্ঞাপন, মডেলিং, মিউজ়িক ভিডিয়ো, টেলিভিশন, বড় পর্দার সফরের পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আত্মপ্রকাশ করেছেন আমির আলি। জ়ি ফাইভের অ্যাকশন-ড্রামা ‘নকশালবাড়ি’ সিরিজ়ে এক ধূর্ত ব্যবসায়ীর চরিত্রে তিনি। ‘‘লকডাউনে অনেক ধরনের ওয়েব সিরিজ়-সিনেমা দেখেছি। তখন ঠিক করেছিলাম, ডিজিটালে কিছু করলে ‘ইনটেন্স’ চরিত্র করব। কারণ টেলিভিশনে প্রেমিক বা কমিক চরিত্রে আমাকে বেশি দেখেছেন দর্শক। তাই প্রস্তাবটা পেয়ে লুফে নিয়েছিলাম,’’ বললেন আমির।
লকডাউনের মধ্যে এই সিরিজ়ের ভাবনা ও তার পরে শুটিংও হয় গোয়ায়। আমির ছাড়া সিরিজ়ের মুখ্য চরিত্রে রাজীব খান্ডেলওয়াল, শক্তি আনন্দ, টিনা দত্ত প্রমুখ। টেলিভিশনের এক সময়ের তারকারা এখন তবে ওটিটিতেই ভরসা রাখছেন? ‘‘রাজীব, শক্তি আমারও আগের প্রজন্মের। তবে সব প্রজন্মের অভিনেতাই এখন ওটিটিতে কাজ করতে চাইছেন। তার বড় কারণ, চরিত্রের দৈর্ঘ্য এখানে গুরুত্ব পায় না। চরিত্রই মুখ্য। একই বছরে একাধিক জ়ঁরও এক্সপ্লোর করা যায়,’’ মত তাঁর। ওটিটিতে টেলিভিশন তারকাদের পুনর্মিলন প্রসঙ্গে আমির বললেন, ‘‘এটা আসলে কাকতালীয়। কারণ ওই সময়ে যাঁরা গোয়ায় ছিলেন, তাঁদেরই মূলত কাস্ট করা হয়েছে সিরিজ়ে। আমিই জীবন বাজি রেখে মুম্বই থেকে গোয়া উড়ে গিয়েছিলাম,’’ হাসি তাঁর কণ্ঠে।
‘নকশালবাড়ি’র পরেই আমিরের আরও একটি সিরিজ় মুক্তির অপেক্ষায়। বিরসা দাশগুপ্তের পরিচালনায় ‘ব্ল্যাক উইডোজ়’-এ অঁসম্বল কাস্টে রয়েছেন তিনি। কলকাতায় শুটও করে গিয়েছেন। ‘‘টলিউডের অনেকের সঙ্গে কাজ করলাম। ‘নকশালবাড়ি’র ঠিক উল্টো এখানের চরিত্রটি। শুটিংয়ের শেষ তিন দিন কোনও নিয়ম মানিনি। যত রকমের মিষ্টি পেরেছি, খেয়েছি,’’ স্মৃতিচারণ তাঁর।
টেলিভিশনে তেমন চরিত্র পেলে এখনও তিনি করতে রাজি। তবে আমিরের কথায়, ‘‘ওটিটি এখন আমার প্রথম পছন্দ। আর এমন শো-ই করব, যেখানে টেলিভিশনের সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করা যাবে।’’ কিন্তু ওটিটি কনটেন্টের উপরে যখন কেন্দ্রের সেন্সরশিপ বলবৎ হবে, তখন কি এই অবাধ এক্সপ্লোর করার সুযোগ পাবেন? ‘‘এই ‘নকশালবাড়ি’ সিরিজ়ে রাজনৈতিক টানাপড়েন থাকলেও কারও নাম করা হয়নি। এটা ফিকশন। কিন্তু নিয়ম কার্যকর হলে চিন্তায় পড়বেন শোয়ের নির্মাতা এবং লেখকেরা,’’ মত তাঁর।
অতিমারি আবহে ওটিটির ব্যবসার সম্প্রসারণ হয়েছে ঠিকই। তবে আমিরের মতে, ‘‘টেলিভিশনেও গ্রোথ হয়নি, তা কিন্তু নয়। হয়তো ওটিটির তুলনায় তা কম। টেলিভিশন আগামী দিনেও থাকবে।’’
আমির এবং তাঁর স্ত্রী সঞ্জিদা শেখ টেলিভিশনের অন্যতম প্রিয় জুটি। কিন্তু তাঁদের সন্তান জন্মানোর পর থেকেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে দু’জনের মধ্যে। আলাদা থাকেন তাঁরা এখন। সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে আমির বলেন, ‘‘এই বিষয়ে একেবারেই কথা বলতে চাই না।’’ সাংসারিক টানাপড়েনের গ্লানি ভুলিয়ে দেয় একরত্তি মেয়ে, ‘‘পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা অনুভূতি বাবা হওয়ার অভিজ্ঞতা,’’ বললেন অভিনেতা।