ফয়জল খান ও কর্ণ জোহর।
আমির খান এবং ফয়জল খান,সম্পর্কে দুই ভাই, দু’জনেই সুদর্শন, কেরিয়ারের প্রথম দিকে একসঙ্গে সিনেমাও করেন। এতদূর অবধি সবটাই ঠিক ছিল। হিসেব মিলল না তারপর থেকে। আমির যখন একের পর এক সিনেমা করে সাফল্যের চূড়ায় দাঁড়িয়ে, ফয়জল তখন তলিয়ে গেছেন বিস্মৃতির অতলে। দাদা যখন রেকর্ড গড়ছেন, ভাই তখন কড়া নাড়ছেন পরিচালকদের দরজায়। জুটছে শুধুই প্রত্যাখ্যান। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে যখন আবার বলিউডের নেপোটিজম, দলবাজি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখনই ফের মুখ খোলেন ফয়জল। আরও অনেকের মতোই তিনিও কাঠগড়ায় তোলেন কর্ণ জোহরকে। কেন তাঁর প্রতি রুষ্ট অভিনেতা?
আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “আমাদের সিনেমা না চললে খারাপ ব্যবহার, অপমান সহ্য করতে হয় অনেক। নিচু চোখে দেখা হয় আমাদের। আমাকেও এমন আচরণ সহ্য করতে হয়েছে। আমার ভাইয়ের ৫০তম জন্মদিনের পার্টিতে কর্ণ জোহর আমার সঙ্গে অদ্ভুত আচরণ করছিলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম আমাকে ছোট করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। আমি যখন একজনের সঙ্গে কথা বলতে যাই, তিনি আমাকে সরাসরি অপমান করেন। এ রকম অনেক ঘটনাই ঘটেছে আমার সঙ্গে।”
কর্ণ জোহরকে নিয়ে এই অভিযোগ নতুন নয়। বলিউডের অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন। আবার কেউ কেউ নাম না করেই অভিমান ঝরিয়েছেন ধর্ম প্রোডাকশনের কর্ণধারের উপর। কঙ্গনা রানাউত তাঁরই শো-তে অতিথি হয়ে তাঁকে নেপোটিজমের ধ্বজাধারী আখ্যা দিয়েছিলেন। তারপর বারবারই তিনি আঘাত শানিয়েছেন কর্ণের উপর। শুধু তাই নয়, সুশান্তের মৃত্যুর জন্যও তিনি দায়ী করেছেন কর্ণ এবং তাঁর ‘মাফিয়া গ্যাং’-কে। তারপর থেকেই আমজনতার মধ্যেও তাঁর জনপ্রিয়তা কমেছে খানিকটা। ইনস্টাগ্রামে হঠাৎই ফলোয়ার সংখ্যা কমে যায় পরিচালকের। চারদিক থেকে উড়ে আসে ট্রোল, কটাক্ষ, ব্যক্তিগত আক্রমণ। এই পরিস্থিতিই কি ফয়জলকে সাহস দিল বলিউডের প্রথম সারির পরিচালকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে?
আরও পড়ুন: ‘রামমন্দির ভাঙতে এসেছে বাবর’, মুম্বই পুরসভার বিরুদ্ধে আদালতে কঙ্গনা
২০০৭ সালে ফয়জল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান, আমির তাঁর প্রতি দুর্ব্যবহার করেন। তাঁকে নাকি গৃহবন্দি করে রাখতেন আমির। তার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। অবশেষে পুলিশ তাঁকে পুণে থেকে উদ্ধার করে মুম্বইয়ে নিয়ে আসে। অভিনেতার মেডিক্যাল পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি সেই সময় ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। যদিও এ সব মানতে নারাজ ফয়জল। নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সুশান্তকে মাদক জোগানের অভিযোগ, ১০ বছর জেল হতে পারে রিয়ার!
ভাইয়ের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পরেও আমিরের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি কখনওই। তাঁর ছবির বক্স অফিস কালেকশনই নায়ক হিসেবে তাঁর সাফল্যের আখ্যান শোনায়। এ দিকে ‘মেলা’-র পরে ফয়জলের আর কোনও ছবি সে ভাবে সফল হয়নি। ধীরে ধীরে মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছেন তিনি। তবে এ বার কর্ণ জোহরের বিরুদ্ধে তাঁর এই অভিযোগ তাঁকে আরও একবার শিরোনামে এনে দিল।
সত্যিই কি তাঁর জন্য কোনও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছিল? দলবাজির শিকার হয়েই কি তাঁর কেরিয়ার শুরু হওয়ার আগে শেষ হয়ে গেল?