song

Song: একরত্তি মেয়ের গলায় এত্ত জাদু, সুরের স্রোতে হৃদি ভাসিয়ে ভাইরাল সাত বছরের হৃদিস্রোতা

গানকে ‘ইচ্ছে গাড়ি’ বানাতে চাওয়া ‘চিনা’ সদ্যই একটি ছবিতে গাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। শিল্পী নচিকতার গানে গলাও মিলিয়েছে সে।

Advertisement

পিনাকপাণি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৯:২০
Share:

হৃদিস্রোতার ডাক নাম চিনা।

চাপা নাকের মেয়েটাকে ছোট্ট থেকেই বাড়ির সবাই ‘চিনা’ নামে ডাকে। গান গেয়ে ভাইরাল হয়ে যাওয়া হৃদিস্রোতা মণ্ডল অবশ্য ওই নামটাই বেশি পছন্দ করে। আর আদুরে গলার গায়িকা হৃদিস্রোতাকে নেটাগরিকদের পছন্দ অনেকগুলো গানের জন্য।

Advertisement

সম্প্রতি তার যে গানটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায় সেটি— ‘আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবিমন বান্ধিবি কেমনে?’ এই লোকগানটি বেশি খ্যাত হয় শিল্পী সাহানা বাজপেয়ীর গলায়। আর সেই গান শুনে শুনেই শিখে নেয় চিনা। তার পর ওর বাবা-মা গানটি রেকর্ড করে ফেসবুকে দেন। কয়েক দিনের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হয়ে যায় হৃদিস্রোতার দরদ ভরা কণ্ঠ। এর পরে আরও আরও অনেক গানেই স্রোতা পেতে শুরু করে। এখন চিনার নিজস্ব ফেসবুক পেজ তো বটেই, ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে।

কার গান প্রিয়? একটুও না ভেবে চিনার জবাব, ‘‘হেমন্তদাদুর (মুখোপাধ্যায়) গান বেস্ট লাগে। গীতা দত্তর গানও আমি শুনতে ভালবাসি।’’ গানের গলা যেমন বেশ পাকা তেমনই পাকা-পাকা কথাও বলতে পারে চিনা। পাকা গিন্নির মতো বলল, ‘‘জানো আমার মোস্ট ফেভারিট গান কোনটা?’’ কোনটা? ‘‘হেমন্তদাদুর ‘তুমসে দূর চলে...’! তবে সব গানই আমার ফেভারিট লাগে,’’— সাত বছরের খুদের দাবি।

Advertisement

চিনার গানের পথ চলা শুরু বাবা-মায়ের হাত ধরে। বাবা, মা দু’জনেই স্কুলে পড়ান। দু’জনেরই বিষয় ইংরেজি। তবে মা রূপা মণ্ডল মুখোপাধ্যায় ছোট থেকে গানের ভক্ত। সেই দৌলতে চিনা বাড়িতে গানের পরিবেশ পেয়েছে ছোট্ট থেকেই। রূপা বলেন, ‘‘স্পষ্ট করে কথা বলার আগেই মাম্মামের (হৃদিস্রোতার আর একটা ডাকনাম) গলায় সুর এসে গিয়েছিল। গানের প্রতি টান আছে বুঝে পরে ওকে শেখাতে শুরু করি।’’ চিনার তখন দু’বছরও বয়স হয়নি। সেই সময় মায়ের স্কুলে গিয়েছিল একদিন। টিচার্স রুমে বসে একটি গান গেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল। এখন শিল্পী রথিজিৎ ভট্টাচার্যের কাছে গানের তালিম নিচ্ছে চিনা। তবে করোনাকালে সবটাই অনলাইনে। তেমনটা লেখাপড়ার ক্ষেত্রেও। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী চিনার সেটা মোটেও ভাল লাগে না। ওর কথায়, ‘‘অনলাইনে স্কুল একদম ভাল লাগে না। আমার বরং গান গাইতে বেশি ভাল লাগে। সব সময় গান করি।’’

চিনার বাবা অরিন্দম মণ্ডল নিজেও গান লেখেন। গত বছর শিশুদিবসে মায়ের কথা ও সুরে ‘বন্ধু তুই কেমন আছিস বল, শাসন বারণ দূরে ঠেলে আয় না খেলি চল...’ গানটি গেয়েছিল চিনা। ইউটিউবে প্রকাশের জন্য রেকর্ডও করেছিল আশা অডিয়ো। করোনাকালে ঘরে আটকে থাকা শিশুদের নিয়ে ওই গানটি বেশ জনপ্রিয় হয় নেটমাধ্যমে। আগামী শিশু দিবসেও ওই সংস্থা একটি গান রেকর্ড করবে। তার অনুশীলন চলছে। গানটি লিখেছেন চিনার বাবা অরিন্দম। সে গানের শুরুটা, ‘গান আমার ইচ্ছে গাড়ি...’।গানকে ‘ইচ্ছে গাড়ি’ বানাতে চাওয়া চিনা সদ্যই ‘জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস’-এর ‘মন খারাপের ওষুধ’ নামের একটি ছবিতে গেয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শিল্পী নচিকেতার গানেও রয়েছে চিনার গলা।

ভাইরাল শব্দটা চেনে চিনা। বড়দের মুখেই শুনেছে। তবে ওর তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বয়সটা তো পুতুল খেলার। অনেক পুতুলও আছে চিনার। তবে হৃদি ভাসে সুরের স্রোতেই। সঙ্গে থাকলে বোঝা যায়, গানই ওর খেলা, খেলাই ওর গান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement