কমেডি, ড্রামা, প্রেম আর একটার পর একটা হিট গান— সব মিলিয়ে সুপার-ডুপার হিট সিনেমা ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’। বন্ধুদের মধ্যে গানের লড়াই থেকে পাড়ার অনুষ্ঠান, আজও কিন্তু একই ভাবে মন ছুঁয়ে যায় এই ছবির গান। অগস্টের ৫ তারিখে ২৫ বছর পূর্ণ করল এ ছবি। রিলিজ হয়েছিল সেই ১৯৯৪ সালে।
‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ প্রথম বলিউড ছবি যা বক্স অফিসে ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে। তবে এখানেই থেমে থাকেনি। সব মিলিয়ে মোট ২০০ কোটির ব্যবসা করেছিল এই ছবি। ৩ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের ম্যারাথন এই ছবি আজও দেখতে শুরু করলে মাঝপথে উঠে যাওয়া যায় না। কিন্তু ২৫ বছর পর ছবির তারকারা কেমন আছেন, কী করছেন জানেন? খোঁজ নেওয়া যাক তাঁদের।
সলমল খান: সলমন তখন ইন্ডাস্ট্রিতে একেবারেই নতুন। সাকুল্যে ২-৩টে ছবি করেছেন। মাধুরী দীক্ষিত তখন কিন্তু ভীষণ জনপ্রিয়। আর আজ? সলমন আজও সমান তালে ছবি করে যাচ্ছেন। তবে এই ২৫ বছরে অনেক বিতর্ক জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর নামের সঙ্গে। ২৫ বছর আগে আর পরে, এই দুই সলমনের মধ্যে মিল একটাই— সলমন তখনও ব্যাচেলার ছিলেন, আজও আছেন।
মাধুরী দীক্ষিত: এক প্রকার ফিল্ম থেকে অবসর নিয়েই নিয়েছেন। হাতে গোনা ছবিতে মাঝেমধ্য়ে তাঁকে দেখা যায়। চিকিৎসক স্বামী এবং দুই ছেলের সঙ্গে বছরের বেশির ভাগ সময়টা বিদেশেই কাটান। তবে কিছু টেলিভিশন অনুষ্ঠান, বিজ্ঞাপনে তাঁকে দেখা যায়। অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের জন্য বিখ্যাত মাধুরী সম্প্রতি নিজের একটা অনলাইন ডান্স অ্যাপও চালু করেছেন।
মণীশ বহেল: ফিল্ম কেরিয়ার যে খুব ভাল তা বলা যায় না। তবে ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছাড়াও ‘দিওয়ানা’, ‘ম্যায়নে পেয়ার কিউ কিয়া’, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’-র মতো হিট ছবি তিনি করেছেন। হয় তিনি ভিলেন হয়েছেন বা নায়কের দাদা-বন্ধু। মুখ্য চরিত্র হওয়ার সুযোগ পাননি। ৫৭ বছরের মণীশ বর্তমানে টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করছেন।
রেনুকা সাহানে: ছবিতে মাধুরীর দিদি হয়েছিলেন তিনি। ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ হিট করলেও রেনুকা সে ভাবে হিট করতে পারেননি। এই ছবির পর তিনি ছোট পর্দায় চলে আসেন। পরে অভিনেতা আশুতোষ রাণাকে বিয়ে করেন।
অলোক নাথ: তাঁকে অনেকে ‘সংস্কারি বাবা’ও বলে থাকেন। কারণ তাঁর অভিনীত বেশির ভাগ ছবিতেই তিনি একজন সৎ এবং সংস্কারি বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অলোক নাথ বর্তমানে টিভি তারকা। #মিটু আন্দোলনে তাঁর নামও জড়িয়েছিল।
রিমা লাগু: অলোক নাথ যে কারণে ‘সংস্কারি বাবা’, রিমা লাগু সে কারণেই ‘বলিউড মাদার’ নামে পরিচিত। তবে ফিল্মের পাশাপাশি ছোট পর্দাতেও যথেষ্ট নাম করেছেন তিনি।
অনুপম খের: আজও অভিনয়ে ভীষণ ভাবে সক্রিয়। ফিল্মের পাশাপাশি থিয়েটারও করে চলেছেন। এবং এই ২৫ বছরে তাঁর কেরিয়ার গ্রাফ সব সময়ই উপরে দিকে উঠেছে।
হিমানি শিবপুরী: ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’-এ আদরের চাচিজান হয়েছিলেন হিমানি শিবপুরী। গত ২৫ বছরে তিনি একাধিক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছোট পর্দাতেও সমান তালে অভিনয় করে চলেছেন তিনি।
বিন্দু: ‘হম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিতে সুপার স্টাইলিশ মামি হয়েছিলেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রচুর অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু ২০০৪ সালে ‘ম্যায় হুঁ না’-র পর অভিনয় থেকে প্রায় অবসর নিয়ে নিয়েছেন।
সতীশ শাহ: এই ছবিতে পারিবারিক বন্ধু-চিকিৎসক হয়েছিলেন। তাঁর অভিনয় ভীষণ প্রশংসিত হয়। বর্তমানে তাঁকেও ছোট পর্দাতে দেখা যায়। ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ তাঁর জনপ্রিয় কমেডি টিভি সিরিজ।
দিলীপ জোশী: ভোলা প্রসাদকে ভুললে চলবে কি করে! নামে ভোলা হলেও অভিনয়ে কিন্তু ভীষণ সাবলীল একজন অভিনেতা দিলীপ জোশী। কমেডি টিভি সিরিজ ‘তারক মেহেতা কা উল্টা চশমা’-র নাম কে না শুনেছে? দিলীপ তারই অন্যতম প্রধান চরিত্রে রয়েছেন।
লক্ষ্মীকান্ত বারদে: একাধারে সলমন খানের বন্ধু, বিশ্বস্ত চাকর এবং প্রেমে সাহায্য করার জন্য একজন আদর্শ মধ্যস্থতাকারী, একটা চরিত্রে এতগুলো কাজ করতে হয়েছিল তাঁকে। এ ছবির পর তিনি একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। সাবলীল এই অভিনেতা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। ২০০৪ সালে কিডনির অসুখে মৃত্যু হয় তাঁর।
রেডো: যার কথা না বললেই নয়, সে হল রেডো। ছবির ক্লাইম্যাক্সে গুরুত্বপূর্ণ রোল ছিল এই রেডোর। একবার ভাবুন তো, কী হত যদি রেডো মণীশের কাছে ছবির শেষের দিকে ওই চিঠিটা না পৌঁছে দিত! রেডো বা সেই টাফিকে এরপর আর কোনও ছবিতে দেখা যায়নি।