সংগৃহীত চিত্র।
দীর্ঘ আইনি জটিলতা এবং রাজ্য- রাজ্যপালের টানাপড়েনের পর, অবশেষে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হতে চলেছে উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া। চলতি মাসের ১৮ অক্টোবর থেকে এই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চালু হতে চলেছে। প্রত্যেকদিন তিনটি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ হবে।
অক্টোবরে ১৮ তারিখ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চলবে। প্রথম দিনই বাছাই করা হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তার সঙ্গে থাকছে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ।
প্রথম পর্যায়ে ১০ দিন ধরে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চললেও তার পর কালীপুজো-ভাইফোঁটা উপলক্ষে তা বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হবে ৬ নভেম্ববর থেকে, যা চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০-র বেশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
দু’দফায় উপাচার্য পদে প্রায় ৫৫০ কাছাকাছি উপাচার্য পদপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ গ্রহণ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর চলতি বছরে ২৬ জুলাই থেকে ২৩ অগস্ট পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করেছে। ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের জন্য আবেদন জমা পড়ে ২,৫০০ মতো। এত আবেদনের মধ্যে থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত সার্চ কমিটি প্রথম পর্বের ইন্টারভিউর জন্য ৫০০ জনকে বাছাই করেছে। সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গড়ে ১৫ জন আবেদনকারীকে চিহ্নিত করে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গঠিত হয়েছে আলাদা সার্চ কমিটি। প্রত্যেক কমিটিতে রয়েছেন পাঁচ জন সদস্য। সার্চ কমিটির মাথায় থাকছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত। তাছাড়া থাকছেন ইউজিসি, রাজ্যপাল এবং রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের একজন করে প্রতিনিধি।
রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের জেরে রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ বেশ কিছুদিন ধরে থমকে রয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। প্রথমে হাইকোর্ট ও পরে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই গঠিত হয় সার্চ কমিটি। নিরপেক্ষতা ও নজরদারি বজায় রাখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন বিচারপতিকে। অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে উপাচার্য পদে।
শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো থেকে শুরু করে গবেষণার ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। দ্রুত অচলাবস্থা কাটিয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হোক এটাই তাঁদের দাবি।