—ফাইল চিত্র।
আজীবন রাজনীতিতে। কিন্তু ২০২১-এ এই প্রথম নির্বাচনী জয়ের স্বাদ পেলেন মুকুল রায়। নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন তিনি। সেখানে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। রাজনীতিতে সদ্য হাতেখড়ি হওয়া নায়িকাকে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করলেন মুকুল। তবে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায় উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে পরাজিত হয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠন করেন, সেই সময় তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মুকুল। ১৯৯৮ সালে যখন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা হয়, সেই সময় দলের প্রতিষ্ঠা-পত্রে যাঁরা স্বাক্ষর করেছিলেন, মুকুল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ২০০১ সালে উত্তর ২৪ পরগণার জগদ্দল থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু ফরওয়ার্ড ব্লকের হরিপদ বিশ্বাসের কাছে পরাজিত হন। তার পর আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং দলের রণকৌশল তৈরি করাতেই সিদ্ধহস্ত ছিলেন।
বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর ২০ বছর পর এ বার ফের ভোটের ময়দানে নামেন। তাতেই কাটল জয়ের খরা। ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল। তার পর যত সময় এগিয়েছে, ততই বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তিনি। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির দায়িত্বও পান। ২০২১-এ তাঁর ভোটে নামাটা এক প্রকার অপ্রত্যাশিতই ছিল। তবে রবিবার ভোটের ফল বেরনোর পর দেখা গেল, পদ্মশিবির থেকে নীলবাড়ির লড়াইয়ে যে তথাকথিত ‘হেভিওয়েট’রা নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে যে ক’জন জয়ী হয়েছেন, মুকুল তার মধ্যে অন্যতম।
তবে মুকুলের জয়ের স্বাদ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে দলের বিপর্যয় এবং সর্বোপরি ছেলে শুভ্রাংশু পরাজয়। বাবার পথ অনুসরণ করেই ২০১৯ সালে তৃণমূল বিজেপি-তে যোগ দেন তিনি। বীজপুরের টিকিটও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু সেখানে পরাজিত হয়েছেন শুভ্রাংশু। অথচ পদ্মশিবিরেও ছেলের রাজনৈতিক জীবন সফল করতে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখেননি মুকুল। ভোটের আগের দিন বীজপুরে ছেলের কাছে ছুটে আসেন তিনি। রাতভর সেখানে থাকেন। ভোট দিয়ে ফিরে যান নিজের কেন্দ্রে। তার পরেও শুভ্রাংশুর পরাজয় আটকাতে পারলেন না তিনি।