রাজ্যের দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে নন্দীগ্রামে লড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু বনাম মমতার এই ‘প্রেস্টিজ ফাইটে’ নজর রেখেছে সারা দেশ। তাই নিজেদের প্রচার ছেড়ে শীর্ষ নেতারা নজর রেখেছন ভোটের রণক্ষেত্র নন্দীগ্রামেই। তৃণমূলের সব প্রথমসারির নেতাই নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সুব্রত মুখোপাধ্যায় থেকে ফিরহাদ হাকিম। কেউ নেত্রীর ভোটের ওপর নজর রাখবেন বলে প্রচারে বের হননি। কেউ আবার হাল্কা প্রচার চালিয়েই দ্রুত বাড়ি ফিরে টিভির পর্দায় চোখ রেখেছেন তৃণমূল নেত্রীর লড়াইয়ের দিকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন শোভনদেব। তৃণমূলের প্রতীকে জেতা প্রথম বিধায়ক দু’দিন আগেই কর্মী সমর্থকদের জানিয়ে দিয়েছিলেন ভোটের দিন কোনও প্রচার কর্মসূচি রাখবেন না তিনি। তাই নেতার নির্দেশ মেনেই ভোটের দিন কোনও প্রচার রাখা হয়নি। বরং বাড়িতে থেকেই নেত্রীর লড়াইয়ের দিকেই নজর রেখে চলেছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। শোভনদেবের কথায়, ‘‘এ বার নন্দীগ্রাম তো আমাদের কাছে একটা বড় বিষয়। তাই নজর রাখতেই হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখছি বিজেপি-র লোকেরা কী উৎপাত করছে। আমাদের নেত্রীও তাঁদের যোগ্য জবাব দিচ্ছেন। ভোট শেষ হলে প্রচারে হয়তো বেরবো না। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় গিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ভোট শেষ হলে সেখানে যাব।’’
বিদায়ী সরকারের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ এ বার পঞ্চম বারের জন্য বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে প্রচার করলেও, নন্দীগ্রামের ভোটের দিন সকাল থেকে কোনও প্রচার কর্মসূচি রাখেননি তিনি। নাকতলার বাড়ি থেকেই অনবরত নন্দীগ্রামে নজর রেখেছেন তিনি। ভোট প্রক্রিয়া যখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে, তখন বেহালায় গিয়ে দু’টি প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। প্রথমটি হবে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডে জেলেপাড়া ও ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডে সতীন সেন পার্কে প্রচার করবেন। তাই সকাল থেকেই বেহালা পশ্চিমের পার্থর নির্বাচনী কার্যালয়েও কিছুটা ঢিমে তালে কাজ চলেছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী আবার মুখ্যমন্ত্রীর ভোট পরিচালনার জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ভাই তথা কলকাতা পুর নিগমের ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সন্দীপ বক্সী।
অল্প হলেও ভোট প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছেন বিদায়ী সরকারের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রচারের ফাঁকে সুযোগ পেলেই খবর নিচ্ছেন নন্দীগ্রামের। বালিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী বলছেন, ‘‘অন্য দিনের তুলনায় আজ একটু হলেও, হাল্কা প্রচার রাখা হয়েছে। সুযোগ পেলেই খবর নিচ্ছি নন্দীগ্রামের।’’ দুপুরের প্রচার দ্রুত শেষ করেই বাড়িতে ঢুকে যান এই বর্ষীয়ান নেতা। সূত্রের খবর, দুপুরে বাড়ি থেকেই টিভির পর্দায় চোখ রেখে চলেছেন সুব্রত। বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন দাখিল করলেন কলকাতা বন্দর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম। দক্ষিণ কলকাতার গোপালনগরের সার্ভে বিল্ডিংয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল করে এসে মনোনয়ন জমা দেন। দুপুর ২টোয় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র মনোনয়ন দাখিল করেই নন্দীগ্রামের ভোটের খোঁজখবর নেন বলেই জানা গিয়েছে।