শুভেন্দুর নয়া ভোটার পরিচয়পত্র।
‘ভূমিপুত্র’ না কি ‘বহিরাগত’! ভোট যুদ্ধে এই বিতর্কে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। এর মধ্যেই নন্দীগ্রামের ভোটার হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার তিনি ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন। বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার আগেই অবশ্য হলদিয়ার বদলে নন্দীগ্রামের ভোটার হতে চেয়ে তিনি আবেদন করেছিলেন।
২০১৪ সাল থেকে হলদিয়া পুর এলাকার ভোটার ছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের ভোট আগামী ১ এপ্রিল। তার আগে নন্দীগ্রামের ভোটার তালিকায় শুভেন্দুর নাম তোলা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এতে একদিকে যেমন তাঁর বিপক্ষে থাকা তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বহিরাগত’ হিসেবে চাপে ফেলতে পারবেন। তেমনি ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে যে জমি আন্দোলন হয়েছিল তার চালকের আসনও ভবিষ্যতে শুভেন্দুর দখলে থাকবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, শুভেন্দু আপাতত নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের নন্দনায়েকবাড়ের বাসিন্দা। তাঁর ভোটার তালিকায় নম্বর ৭৬। তিনি এবার থেকে নন্দনায়েকবাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোট দেবেন। গত ৬ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় শুভেন্দুর নন্দীগ্রামের ভোটার হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। উল্লেখ্য, ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন, সংশোধন এবং বিয়োজন সংক্রান্ত চূড়ান্ত সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তার আগেই তিনি নন্দীগ্রামের ভোটার হতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেন বলে জানা গিয়েছে। আর এর পরেই ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, নিয়মমতো কোনও ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হতে গেলে রান্নার গ্যাস, জমির মালিকানার নথি, বিদ্যুৎ বিল বা ভাড়াবাড়িতে থাকার রসিদ জমা দিতে হয়।
গত ৯ মার্চ প্রার্থী ঘোষিত হওয়ার পর নন্দীগ্রামে প্রথম পা রাখেন মমতা। সে সময় ‘ কোন বহিরাগত নয়, ভূমিপুত্রকে চায় নন্দীগ্রাম’ বলে প্রচুর ব্যানার দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গে তিক্ততার সূচনা থেকেই শুভেন্দু নিজেকে মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র হিসেবে উপস্থাপিত করার চেষ্টা করেছেন। এদিন মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর শুভেন্দু বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আমার বরাবরের আস্থার জায়গা। এখানে আমি প্রত্যেকবার আসি।’’
নন্দীগ্রামে ভোটার তালিকায় শুভেন্দুর নাম থাকার প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘শুভেন্দু নন্দীগ্রামে ব্যক্তিগতভাবে জমি কিনেছেন। তিনি এখানকার ভোটার। তাই তাকে ভূমিপুত্র হিসেবে পেয়ে সকলেই উচ্ছ্বসিত। বরং তাঁর প্রতিপক্ষ তৃণমূল এবং সিপিএম দুজনেই বহিরাগত।’’ পাল্টা শুভেন্দুর এই ঠিকানা বদলকে কটাতবে তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নন্দীগ্রামের যোগ ১৯৯৮ সাল থেকে। আর নেত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে এসেছিলেন শুভেন্দু। নেত্রীর মাধ্যমে তাঁর পরিচয়।’’