ভোটে হারজিত আছেই। কিন্তু নীলবাড়ির লড়াইয়ে অংশ নিয়ে করোনার কাছেও হারতে হয়েছে অনেককে। রাজ্যে তিন আসনের প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে ভোটের আগেই। উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ আসনের প্রার্থী কাজল সিংহ জানতেও পারবেন না তিনি জিতলেন না হারলেন। ভোটের পরে কিন্তু ফল ঘোষণা আগেই করোনা কেড়ে নিয়েছে প্রাণ।
ভোট গণনার সময় বাড়িতেও বন্দি থাকতে হবে অনেককে। গণনা কেন্দ্রে যেতে পারবেন না তাঁরা। যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। এখন বাড়িতে এলেও তাঁকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। একই রকম ভাবে কসবার সিপিএম প্রার্থীও চিকিৎসাধীন। শেষ যা জানা গিয়েছে, তাঁর ফুসফুসের সংক্রমণ পুরোপুরি সারেনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও বাড়িতেই থাকতে হবে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেছেন কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। এখন শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিস আলিও করোনা আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিজেপি-র কয়েকজন প্রার্থীও করোনা আক্রান্ত। মালদহের ইংলিশবাজারের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গত ২৩ এপ্রিল অসুস্থ হওয়ার পরে মালদহের বাড়িতেই ছিলেন শ্রীরূপা। পরে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। টালিগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ও করোনা আক্রান্ত হন। তবে শনিবার তাঁর রিপোর্ট এসেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কোভিডে গৃহবন্দি হলেন। রয়েছেন আসানসোলের বাড়িতে। তাঁর স্ত্রী রচনাও আক্রান্ত। বিজেপি-র বরাহনগরের প্রার্থী অভিনেত্রী পার্নো মিত্রও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে নিভৃতবাসে রয়েছেন। জীবনের প্রথম ভোটযুদ্ধে নামা পার্নোও গণনা কেন্দ্রে আসতে পারবেন না।
প্রার্থী নন এমন অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বাড়িতেই থাকতে হবে গণনার দিনে। তাঁদের মধ্যে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় যেমন আছেন তেমনই আছেন তৃণমূল সাংসদ মৌসম বেনজির নূর। এ ছাড়াও কলকাতা ও জেলায় অনেক প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতানেত্রী নিজেদের নিভৃতবাসে রেখেছেন ভোটের পরে।
ভোটে জিতে যে বিজয় মিছিল করা যাবে না, কয়েক দিন আগেই তা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু জয়-পরাজয় তো গণনার পরে। তার আগে, ২ মে গণনা কেন্দ্রগুলিকে কার্যত দুর্গের চেহারা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। গণনা কেন্দ্রে যাঁরা থাকবেন তাঁদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ থাকা বাধ্যতামূল করেছে কমিশন। গণনা কেন্দ্রে ঢোকার মুখে প্রত্যেক প্রার্থী ও এজেন্টের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। সামান্যতম উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর মাস্ক পরা, বর্মবস্ত্র পরা, জীবাণুমুক্ত করার মতো যে-সব নিয়মের কথা বলা হয়েছে, তা না-মানলে আইনত ব্যবস্থাগ্রহণের কথাও জানিয়েছে কমিশন। জয়ীয়ের শংসাপত্র নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক কড়াকড়ি।