গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আট দফা ভোটের শেষে বুথফেরত সমীক্ষায় বাংলার ফলাফল নিয়ে কোনও স্পষ্ট দিশা পাওয়া গেল না।
অধিকাংশ মূলস্রোতের সমীক্ষাতেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাতে শাসক তৃণমূলকে সামান্য এগিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনও পক্ষই ২৯৪ আসনের বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার কাছকাছি পৌঁছতে পারেনি। অথচ, দুই শিবিরই প্রথম থেকে দাবি করে আসছে যে, তারা ২০০ আসনের গন্ডি পেরোবেই। এই দাবি এবং পাল্টা দাবির আবহেই অষ্টম দফার ভোটের শেষে সামনে এসেছে বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল। যাতে যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে কাউকেই খুব ‘স্বচ্ছন্দ’ ভাবে জয়ী বলে দেখা হয়নি। ফলে ঠিকঠাক ফলাফল জানতে আগামী রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। বুথফেরত সমীক্ষার ইঙ্গিত মিলে গেলে সেখানেও প্রচুর সাসপেন্স থাকার অবকাশ রয়েছে।
বুথফেরত সমীক্ষায় বাংলা ছাড়া বাকি যে রাজ্যগুলির ফলাফল সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তা অবশ্য প্রত্যাশিত। কেরলে বামজোট, তামিলনাড়ুতে বিজেপি জোট এবং অসমে বিজেপি-র জয়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তা ঠিক হয় কিনা, সময়ই বলবে। তবে আরও একটি ইঙ্গিত আছে সমীক্ষায়— সব রাজ্যেই কংগ্রেসের অবস্থা সঙ্গীন। পশ্চিমবঙ্গেও বাম-কংগ্রেস-আব্বাস সিদ্দিকির জোটকে খুব বেশি আসন কোনও সমীক্ষাতেই দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ইতিহাস বলে, এই ধরনের সমীক্ষার ফলাফল যে সবসময়ে হুবহু মিলে যায়, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই সমীক্ষার ফলাফল আসল গণনার সময় গিয়ে একেবারে উল্টো হয়েছে, এমন দৃষ্টান্তও একাধিক রয়েছে। তবে সাধারণত এমন সমীক্ষা থেকে ফলাফলের আগাম একটা ইঙ্গিত পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে তা ইঙ্গিতই মাত্র।
রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২৯২টি আসনে ভোট হয়েছে। সমশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে করোনা সংক্রমিত হয়ে দুই প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই দুই আসনে ভোট ১৬ মে। ইন্ডিয়া টু ডে-র বুথফেরত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ১৩৪ থেকে ১৬৪টি আসন। পক্ষান্তরে, তৃণমূল পেতে পারে ১৩০ থেকে ১৫৬টি আসন। বাম-কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে সর্বোচ্চ ২টি আসন। অর্থাৎ, লড়াই একেবারে সেয়ানে-সেয়ানে। কিন্তু তাতে সামান্য এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এবিপি আনন্দে দেখানো বুথফেরত সমীক্ষা আবার বলছে, ১৫২ থেকে ১৬৪টি আসন পেতে পারে তৃণমূল। অর্থাৎ, ‘ম্যাজিক ফিগার’ ১৪৮টি আসনের চেয়ে সামান্য বেশি আসন পেয়ে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের সমীক্ষা বলছে, বিজেপি পেতে পারে ১০৯ থেকে ১২১টি আসন। বাম, কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকির সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে ১৪ থেকে ২৫টি আসন।
সিএনএন-নিউজ এইট্টিনে প্রকাশিত বুথফেরত সমীক্ষায় তৃণমূলকে দেওয়া হয়েছে ১৬২টি আসন। বিজেপি-কে দেওয়া হয়েছে ১১৫টি আসন। সংযুক্ত মোর্চাকেও ১৫টি আসন। রিপাবলিক টিভি তাদের বুথফেরত সমীক্ষায় আবার বিজেপি-কে দিয়েছে ১৩৮-১৪৮টি আসন। তৃণমূলকে ১২৮-১৩৮টি আসন। সংযুক্ত মোর্চাকে ১১-২১টি আসন। ফলে তাদের বুথফেরত সমীক্ষাতেও বিজেপি-কে সামান্য এগিয়ে রাখা হয়েছে। তবে সংযুক্ত মোর্চাকে তাদের সমীক্ষায় দুই অঙ্কের আসনে পৌঁছতে দেখা গিয়েছে।