প্রতীকী ছবি।
এবারে বাম কংগ্রেস জোটে ফাটল ধরল অধীর চৌধুরীর খাস তালুক মুর্শিদাবাদে। বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জোট ধর্ম ভাঙার অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের দুটি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। শুক্রবার বহরমপুর ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জোটের তরফ থেকে মুর্শিদাবাদ ও রানিনগর আসন দুটি এবারে কংগ্রেস পেয়েছে। আর সেই দুটি আসনে প্রার্থী দিতে চেয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ওই দুটি আসনে লড়তে চাই। রাজ্য অনুমোদন দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক বিভাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জোটের নীতি মেনে পুরুলিয়ার জয়পুর আসন আমাদের ভাগে পড়েছে। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। আবার শমসেরগঞ্জ আসনটি সিপিএমের প্রাপ্য। সেটিতে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। এভাবে কংগ্রেস জোট প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে চাইছে। ওরা বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করতে পারলে আমরা কেন জেলার দু’টি আসনে প্রার্থী দিতে পারব না?’’ তাঁর দাবি, ‘‘এবিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন চেয়েছি।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের জেলার আহ্বায়ক নৃপেন চৌধুরী বলেন, ‘‘শমসেরগঞ্জ একটি ইস্যু। সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। সেটাকে উদাহরণ করে অন্যত্র একই ধরনের পাল্টা প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে আমরা নই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে জোটের যে মূল নীতি তা থেকে আমরা সরব না। ফরওয়ার্ড ব্লক কী করছে সেটা তাঁদের আভ্যন্তরিন বিষয়। তা নিয়ে আমরা মন্তব্য করব না।’’
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘শমসেরগঞ্জ ইস্যু সিপিএম ও কংগ্রেসের বিষয়। সেটিকে অজুহাত দেখিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের জোট ভাঙার চেষ্টা করা উচিত নয়। কাদের ইন্ধনে এসব হচ্ছে আমরা জানি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি আসনে আমাদের। সেখানে ফরওয়ার্ড জোট নীতি না মেনে দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে সব কিছু করেছে। তাই আমরা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের কাছে জয়পুর আসন দাবি করেছি। অধীর চৌধুরী সব সময়ে জোটের পক্ষে সওয়াল করে আসছেন একথা সবাই জানেন।’’
ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি, ১৯৭৭ সাল থেকে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে তারা লড়াই করে আসছেন। মাঝে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র ভেঙে রানিনগর ও মুর্শিদাবাদ হয়। তখনও এই দুটি আসন ফরওয়ার্ড ব্লকের ভাগে পড়েছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট রাজনীতির কারণে রানিনগর আসন ছেড়ে ফরওয়ার্ড ব্লক শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ সে বছর ওই কেন্দ্রে সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল। তাই জোটের আলোচনার শুরুতেও ফব জেলা নেতৃত্ব রানিনগর ও মুর্শিদাবাদে আসনে প্রার্থী দিতে চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। তা মানা হয়নি।