নওশাদের দুই ছেলে লালন ও আজহারউদ্দিন। —নিজস্ব চিত্র
ভাইজান আব্বাস সিদ্দিকীর দলে যোগ দেওয়ায় ছেলেদের ত্যাজ্যপুত্র করার হুমকি তাঁদের ‘আব্বাজান’-এর। ভোটযুদ্ধ কার্যত ধর্মযুদ্ধের চেহারা নিয়েছে জগৎবল্লভপুরের মিদ্যা বাড়িতে। শুধু ত্যাজ্যপুত্র করার হুমকি নয়, আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এ যোগ দেওয়ার ‘শাস্তি’ হিসেবে দুই ছেলে ও বৌমাদের বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতা নওশাদ মিদ্যার বিরুদ্ধে। এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে আইএসএফ।
জগৎবল্লভপুরের চক সাহাদাত গ্রামের বাসিন্দা নওশাদ দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের সক্রিয় নেতা। তাঁর পাঁচ সন্তান এবং পরিবারের সদস্যরাও তৃণমূলের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে রাজ্য রাজনীতিতে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর প্রভাব বাড়ছে। সেই স্রোতেই গা ভাসিয়ে আইএসএফ-এ যোগ দিয়েছেন নওশাদের দুই ছেলে লালন ও আজহারউদ্দিন। তার পর থেকেই পরিবারে শুরু হয় বিবাদ, সঙ্ঘাত।
তালাবন্ধ বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার সেই বিবাদ চরমে ওঠে। সকালে দুই ছেলে ও তাঁদের স্ত্রী-কে বাড়ি থেকে বাইরে বার করে নওশাদ তালা ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘ছেলে-বৌমারা নিজেরাই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে।’’ একইসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘আব্বাসের দল না ছাড়লে ঘরে ঢুকতে দেব না দুই ছেলেকে। ত্যাজ্যপুত্র করে দেব।’’
লালন ও আজহারউদ্দিন অবশ্য সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হতে চাননি। এলাকার সংযুক্ত মোর্চার কর্মী শহিদুল রহমান হালদার বলেন, ‘‘তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। নিজেদের ঘরেই অশান্তি হচ্ছে। তৃণমূল ছেড়ে আইএসএফ করায় যে ভাবে ছেলে-বৌমাদের ঘর থেকে বার করে দেওয়া হল, তা খুবই দুঃখজনক।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ সব করে লাভ হবে না তৃণমূলের। আসন্ন নির্বাচনে এই কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীই জয়লাভ করবেন।’’
সিপিএম, কংগ্রেস এবং আব্বাস সিদ্দিকীর দল আইএসএফ এ বার জোট করে আসন ভাগাভাগি করে ভোটে লড়ছে। জগৎবল্লভপুর আসনটি আইএসএফ-এর জন্য ছেড়েছে সংযুক্ত মোর্চা। প্রার্থী হয়েছেন সাবির আহমেদ। লালন ও আজহারউদ্দিন শুধু আইএসএফ-এ যোগ দেওয়া নয়, সাবিরের হয়ে প্রচারও করছেন। তাতেই বেজায় চটেছেন নওশাদ।