Parenting during examination

সামনেই পরীক্ষা, এই সময় কী ভাবে সন্তানের পাশে থাকবেন অভিভাবকেরা?

অনেক স্কুলেই বছর শেষের পরীক্ষা শুরু হতে বেশি দিন বাকি নেই। পড়ুয়াদের এই সময় যেমন মন দিয়ে পড়তে হবে, তেমনই পাশে থাকতে হবে বাবা-মাকেও। এই সময় অভিভাবকদের ভূমিকা কেমন হওয়া দরকার?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৬
Share:

পরীক্ষার সময় কী ভাবে পাশে থাকবেন অভিভাবকেরা? ছবি: সংগৃহীত।

স্কুলের পরীক্ষা শেষে গিয়েছে অনেকের। আবার বাকিও রয়েছে কারও কারও। এক দিকে শীতে বেড়ানো, পিকনিকের আকর্ষণ। অন্য দিকে, পরীক্ষা। এরই মধ্যে পড়ায় মন বসানো সহজ কথা নয়। অনেক স্কুলেই বার্ষিক পরীক্ষা বাকি। এমন সময় কী ভাবে সন্তানদের পাশে থাকবেন অভিভাবকেরা?

Advertisement

বয়স অনুযায়ী অভিভাবকদের ভূমিকাও ভিন্ন হবে, বলছেন মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা থেকে ভয় পেলে তাদের পাশে থাকতে হবে বাবা-মাকে। পেরেন্টিং কনসাল্ট্যান্ট পায়েল ঘোষের কথায়, সন্তানের বয়স যা-ই হোক, অভিভাবকেরা যদি কোন বিষয় কতটা বাকি, কোথায় দুর্বলতা, তা বুঝে সাময়িক ভাবে রুটিন করে দেন, তাতেও সুবিধা হবে।

বাবা-মায়ের সাহচর্য

Advertisement

পরীক্ষার আগে কোনও কোনও পড়ুয়া ভয় পেয়ে যায়। কোনও বিষয়ে পিছিয়ে পড়লে বা ভীতি থাকলে এই সময়ে তারা আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে পারে। মনোবিদ বলছেন, ছোটদের ক্ষেত্রে তো বটেই, সন্তান বড় হলেও পড়াশোনার বিষয়টিতে অভিভাবকদের নজর থাকা দরকার। পেরেন্টিং কনসাল্ট্যান্ট পায়েল ঘোষের কথায়, শিশুরা ক্লাস, পাঠ্যক্রম— সব কিছু তাল মিলিয়ে করতে পারে না। তবে যতই ব্যস্ততা থাক, বার্ষিক পরীক্ষার অন্তত তিন সপ্তাহ বা মাসখানেক আগে অভিভাবকদের সময় দিতেই হবে।

অভিভাবকদের ভূমিকা

১. প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার, কোন বিষয়ের প্রস্তুতি কত দূর। কোনটিতে সন্তান পিছিয়ে রয়েছে বা বোঝার ক্ষেত্রে এখনও অসুবিধা রয়ে গিয়েছে। সন্তানের সঙ্গে কথা বলেই রুটিন তৈরি করে নেওয়া জরুরি।

২. পড়াশোনার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করা জরুরি। পরীক্ষার আগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সন্তান যাতে পড়াশোনার সুযোগ পায়, সেটি দেখতে হবে। অনিন্দিতা বলছেন, বাবা-মাকেও সতর্ক হতে হবে। বাড়িতে ঘন ঘন বন্ধুবান্ধব, অতিথি আসা বা পার্টি এই কয়েক দিনের জন্য পারলে বন্ধ করাই ভাল। এতে পড়ার সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মনও বিক্ষিপ্ত হতে পারে।

৩. পরীক্ষার আগে জোর দিতে হবে নিজে পড়ায়। পায়েলের কথায়, এই সময় যদি বিভিন্ন বিষয়ে স্বল্প সময়ের জন্য পরীক্ষা নেওয়া যায় তা হলে সুবিধা হবে। কোন ধরনের প্রশ্ন আসে, সে সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হওয়ার পাশাপাশি লিখলে নির্ধারিত সময়ে উত্তর শেষ করার অভ্যাসও তৈরি হবে।

৪. মনঃসংযোগের জন্য মোবাইল, ল্যাপটপের পর্দা থেকে বেরোনো জরুরি। এ ক্ষেত্রে শুধু সন্তানকে বারণ করলেই হবে না, অভিভাবকদেরও সংযত এবং সতর্ক হওয়া দরকার। চলমান ছবি দেখার পর বইয়ের পাতায় মন বসানো খুব কঠিন।

৫. অনেকেই রাত জেগে পড়ে আবার বেলায় ঘুম থেকে ওঠে। নিজের মতো সময় নির্দিষ্ট করে নেওয়াই যায়, তবে পরীক্ষা যে হেতু সকালেই হবে, এই ধরনের অভ্যাসে সমস্যা হতে পারে পড়ুয়াদের। ফলে পায়েলের পরামর্শ, খুব বেশি রাত পর্যন্ত না জেগে সকালে ওঠার অভ্যাস থাকলে ছাত্রছাত্রীদেরই সুবিধা হবে।

পরীক্ষা মানে কি আনন্দ, বেড়ানো ব্রাত্য?

এ সব করা যাবে না, তা কিন্তু মোটেই বলছেন না মনোবিদ বা পেরেন্টিং কনসাল্ট্যান্ট। বরং তাঁরা বলছেন, পড়ার ফাঁকে বিরতি জরুরি। খোলা হাওয়ায় হাঁটা, চাইলে খেলাধুলো, নিজের মতো সময় কাটানো যেতেই পারে, তবে ‘স্ক্রিন টাইম’ যেন দীর্ঘ না হয়। অনিন্দিতার কথায়, কেউ গান শেখে, কেউ আঁকা। যদি সেই সব শিখতে গেলে খুব বেশি সময় নষ্ট না হয়, সেগুলিও পড়াশোনার পাশাপাশি বজায় রাখা যেতে পারে। এতে বরং পড়ার একঘেয়েমি থেকে মুক্তি মিলবে। তবে, এটাও তাঁরা মনে করাচ্ছেন, পরীক্ষা মানে অতিরিক্ত নম্বরের প্রত্যাশা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। বরং এই সময়ে ভীষণ ভাবে সন্তানের পাশে থাকা জরুরি বাবা-মায়ের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement