গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবার কাকভোরে তারকেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্তকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জীবনের প্রথম ভোটযুদ্ধে নেমেছেন স্বপন। তৃতীয় দফায় ভোট হচ্ছে তাঁর কেন্দ্র হুগলির তারকেশ্বরে। খোদ প্রধানমন্ত্রী তাঁকে শুভেচ্ছা জানানোয় স্বভাবতই খুশি তারকেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী।
প্রসঙ্গত, স্বপন রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। সেখান থেকে সোজা তাঁকে নিয়ে এসে বাংলার ভোটযুদ্ধে সামিল করা হয়েছে। তারও আগে প্রাক্তন সাংবাদিক স্বপনকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়েছিল বিজেপি-র ‘বৌদ্ধিক মুখ’ হিসেবে। কিন্তু তাঁকে সরাসরি ভোটের লড়াইয়ে নামিয়েছেন মোদীই। সে অর্থে স্বপন ‘প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী’। ঘটনাচক্রে, তারকেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে রাজ্যসভার সাংসদপদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছেন স্বপন। সংসদের ভিতরের বাগ্বিতণ্ডার আবহ ছেড়ে স্বপন এ বার আমজনতার মাঝে নেমেছেন ভোট চাইতে। জয় পাওয়ার জন্য রাস্তায় রাস্তায় পদব্রজে প্রচার, ছুটে বেড়ানো, পথসভা, জনসভা, বাবা তারকনাথের মন্দিরে গিয়ে বাবার মাথায় জল ঢেলে আশীর্বাদ চেয়ে নেওয়া— কোনও কিছুতেই খামতি ছিল না তাঁর। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীর সম্মান রাখতে স্বপনও অতিরিক্ত সক্রিয় এবং তৎপর।
বরাবরই ‘মোদী-ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত স্বপন। রাজ্যসভার সাংসদ থাকাকালীনও তিনি ‘মোদীর লোক’ বলেই পরিচিত ছিলেন। তাই তাঁর প্রথম ভোটযুদ্ধের আগে মোদী যে তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানাবেন এবং মনোবল বাড়াবেন, তা অপ্রত্যাশিত নয়। ঘটনাচক্রে, স্বপন যখন মঙ্গলবার তাঁর কেন্দ্র তারকেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন মোদী নিজেও রাজ্যে রয়েছেন। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার এবং হাওড়ায় দু’টি নির্বাচনী জনসভা রয়েছে তাঁর। মোদী যখন ‘উন্নয়নের বার্তা’ নিয়ে তাঁর নির্বাচনী প্রচারে বাছা-বাছা শব্দে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন, তখন তাঁর ‘সেনানী’ স্বপন স্বাদ নিচ্ছেন জীবনের প্রথম ভোটযুদ্ধের। স্বপনের কাছে তারকেশ্বরে জয় একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ ব্যক্তি মোদী এবং গোটা বিজেপি-র কাছেও। মঙ্গলবার ভোট শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন নিঃসন্দেহে সেই লড়াইয়ে স্বপনকে ‘বাড়তি অক্সিজেন’ যুগিয়ে গিয়েছে। এখন দেখার, সেই শুভেচ্ছা স্বপনের কাজে আসে কি না।