উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রত্যুষ মণ্ডলের হয়ে প্রচারে গায়ক-অভিনেতা মনোজ তিওয়ারি।
হুডখোলা জিপে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে তিনি গাইছেন। বিজেপি সাংসদ তথা গয়ক-অভিনেতা মনোজ তিওয়ারির সেই গান ডিজে বক্স হয়ে প্রচণ্ড শব্দে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। যে এলাকা দিয়ে রোড-শো যাচ্ছে, ডিজে-র তাণ্ডবে সেখানকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হলেও ভোটভিক্ষায় বেরনো লোকেদের তাতে পরোয়া নেই! তাঁরা উচ্ছ্বসিত।
মঙ্গলবার এ ভাবেই ডিজে বাজিয়ে উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রত্যুষ মণ্ডলের প্রচার চলল বাউড়িয়ায়। তবে, শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূলের প্রচারেও ডিজে বাজার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের চোখের সামনেই চলছে যথেচ্ছাচার। অথচ, নির্বাচন কমিশনের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা। কমিশন সূত্রের অবশ্য দাবি, বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে। প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন সকালে মনোজ হেলিকপ্টারে বাউড়িয়ায় আসেন। বাউড়িয়া জুটমিলের সামনে থেকে সিনেমাতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার রোড-শো করেন। পুরো রাস্তাতেই ডিজে বেজেছে। মনোজ আসার আগে ডিজে-তে গান চলছিল। প্রত্যুষও রোড-শোতে ছিলেন। তিনি অবশ্য ডিজে বাজানোর কথা অস্বীকার করছেন। তাঁর দাবি, ‘‘মনোজ এক জন গায়ক ও অভিনেতা। তাই কর্মীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য তিনি গান গেয়েছেন। সে জন্য কয়েকটি বক্স রাখা হয়েছিল। সেগুলিও যথেষ্ট আস্তে বাজানো হয়েছে। ডিজে বাজেনি।’’
এর আগে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিদেশ বসুর মনোনয়নপত্র পেশ করতে যাওয়ার সময় ডিজে বাজতে দেখা গিয়েছে। যদিও উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা তৃণমূলের সভাপতি বেণু সেনের বক্তব্য, তাঁদের প্রচারে ডিজে বেজেছে, এমনটা তাঁর জানা নেই। তবে কর্মীরা উৎসাহিত হয়ে বাজিয়ে থাকতে পারেন। শ্যামপুরের বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীর প্রচারেও ডিজে বাজছে বলে অভিযোগ।
ডিজে বাজার বিষয়টি প্রশাসনের আধিকারিকরা মেনে নিয়েছেন। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলি মাইক বাজানোর অনুমতি নিয়ে গিয়ে ডিজে বাজাচ্ছে। আমরা এগুলো ক্যামেরাবন্দি করছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, কেউ যদি নির্দিষ্ট ভাবে ডিজে নিয়ে অভিযোগ করেন বা নির্বাচন কমিশন থেকে অভিযোগ করে, তা হলে তদন্ত করে দেখা হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের এক আধিকারিকের আক্ষেপ, ‘‘প্রচারের অনুমতি নেওয়ার সময় ডিজে না-বাজানোর কথা বলে দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ডিজে বাজছে।’’