বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে ঝাড়গ্রাম শহরের জামদায় মোটরবাইক ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দফার ভোট মিটতেই দোলের দিনে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কাঁথি। ইটবৃষ্টি থেকে শুরু করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ— বাদ রইল না কিছুই। অন্য দিকে, দু’দলের মধ্যে গন্ডগোলে উত্তপ্ত হল ঝাড়গ্রামও।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি শহরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যত ব্যর্থ হয় কাঁথি থানার পুলিশ। এর পর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়। এলাকায় চলছে পুলিশ পিকেটিং। ঝাড়গ্রামেও ইটপাটকেল ছোড়া, ভাঙচুর চলে। বিজেপি-র অভিযোগ, তাদের দলের কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় তৃণমূলের লোকজন। যদিও হামলার কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রবিবার কাঁথি শহরের অধিকারী পাড়ার ক্যানাল পাড়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করতে থাকে। এক সময় ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ শুরু করে দু’দলের লোকজন। এই ঘটনায় রক্তাক্ত হয়েছেন দু’দলের ২০ জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মারিশদা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যত ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীনামানো হয়। উওেজিত বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মী-সর্মথকদের হঠিয়ে দিয়ে আহতদের উদ্ধার করে কাঁথি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কাঁথির মতো ঝাড়গ্রাম শহরেও শাসকদলের সঙ্গে বিজেপি-র সংঘর্ষ বাধে। উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
ঝাড়গ্রামে গন্ডগোলের সূত্রপাত রবিবার দুপুরে। জামদা ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দু’দলের কর্মীদের মধ্যে বচসার শুরু হয়েছিল। সেখানে গন্ডগোলের জেরে জামদা হরিমঞ্চের সামনে বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। তা নিয়ে দু’দলের মধ্যে মারধরের শুরু। এক বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, “বাড়ির বাবা-মা, বৌদিকে মারধর করেছে তৃণমূলের লোকেরা। তাঁদের মাথা ফাটিয়ে দেয়।” আহতদের ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে ঝাড়গ্রামের বিজেপি-র প্রার্থী সুখময় শতপথী-সহ বিজেপি-র লোকজন ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে পৌঁছন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বিজেপি-র লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
ওই ঘটনার সময় তৃণমূলের লোকজন জামদার হরিমঞ্চের কাছে পৌঁছন। এর পরেই তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-র সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষই একে অপরের দিকে ইট, কাচের বোতল ছুড়তে থাকে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের একটি সেলও ফাটায় পুলিশ। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা।
ঝাড়গ্রামে তৃণমূল উত্তেজনা ছড়াতে চাইছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। তাদের অভিযোগ, “সন্ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে তৃণমূল। হাতে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে তৃণমূলের লোকেরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কথা জানানো হয়েছে।” যদিও বিজেপি-র বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলেন, “তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে বিজেপি। ওরা পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।”