বুথে ভোটদাতাদের লাইন। ছবি: পিটিআই।
চতুর্থ দফার শীতলখুচি-কাণ্ডের মত প্রাণহানি দেখতে হয়নি। তবে ষষ্ঠ দফার ভোটেও আইনরক্ষকদের রাইফেলের ‘আগুন ঝরাতে’ দেখল রাজ্য। ঝরল রক্তও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও। যদিও তারই মধ্যে বুথে বুথে ভোটারদের বিপুল উপস্থিতিও চোখে পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের হিসেব বলছে, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪ জেলার ৪৩টি কেন্দ্রে ভোটদানের হার ৭৯.০৮ শতাংশ।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের ট্যাংরা আদর্শ শিক্ষানিকেতন বিদ্যালয়ের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে দুই তৃণমূল সমর্থক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। ওই জেলারই বাগদা বিধানসভায় ভোট চলাকালীন গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেখানে আহতের সংখ্যা ৩। নির্বাচন কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অশোকনগরে গুলি চালানোর অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। কিন্তু বাগদার ৩৫ নম্বর বুথে পুলিশের গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বাগদার ঘটনায় ৩ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২ জন গুলিবিদ্ধ হলেও তৃতীয় ব্যক্তির আহত হওয়ার কারণ জানতে অনুসন্ধান চলছে।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বাগদায় বিজেপি কর্মীরা ধারাল অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হন। বেধে যায় খণ্ডযুদ্ধ। অস্ত্রের কোপে জখম হন বাগদা থানার ওসি উৎপল সাহা। জখম হন এক কনস্টেবলও। কমিশন বলেছে, একটি রাজনৈতিক দলের শ’খানেক সমর্থক পুলিশের উপর চড়াও হয়েছিল বাগদায়।
কমিশনের তরফে ব্যারাকপুর বিধানসভার ১০৮ নম্বর বুথের কাছে বোমাবাজির কথা জানানো হয়েছে। অশান্তির আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরে ভোটের আগে অতিরিক্ত আরও ১ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছিল কমিশন। বড় কোনও সংঘর্ষ না হলেও সেখানে দিনভর উত্তেজনার পারদ চড়া ছিল। ব্যারাকপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী রাজ চক্রবর্তীকে লক্ষ্য করে লালকুঠি ২ নম্বর বুথের কাছে বিজেপি সমর্থকেরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে সমায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়।
উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর আসনেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়ের উপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই কেন্দ্রের অন্তর্গত কাঁচরাপাড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু বাসা সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূলের ক্যাম্প ভাঙচুরের ঘটনায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ আঙুল উঠেছে।
নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রেও বিজেপি সমর্থকেরা তৃণমূল কর্মীদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি আসনেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি এবং তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গলসি বিধানসভার মনোহর সুজাপুর এবং শিড়রাই গ্রামের ভোটারদের তৃণমূল ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ধর্নায় বসেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বিকাশ বিশ্বাস।