নিজস্ব চিত্র।
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে হুমকি দিয়ে বিতর্কের মুখে সদ্য বিজেপি-তে আসা তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের রায়না কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে আরও দু’জন থাকতে পারবেন। কিছু ক্ষণ পর সেখানে সুনীল আসেন। ভিতরে ঢুকতে গেলে কর্তব্যরত প্রশাসনিক আধিকারিকরা তাঁকে বাধা দেন। সেই সময় মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ভগীরথ হালদার। তিনি জানান, যে হেতু প্রার্থীর সঙ্গে দু’জন যাওয়ার অনুমতি রয়েছে, তাই তাঁদের মধ্যে কেউ এক জন বেরিয়ে এলেই সুনীল ভিতরে ঢুকতে পারবেন। তাতেই মেজাজ হারান সাংসদ।
অভিযোগ, এর পরই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে হুমকি দেন সুনীল। অভিযোগ তোলা হয়েছে সুনীল নাকি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, “ইনস্ট্রাকশন তো আর ক’টা দিন, তার পর ইনস্ট্রাকশন আমরা দেব।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। এক জন সাংসদ হয়ে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিককে কী ভাবে এমন মন্তব্য করতে পারলেন তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “তৃণমূলের কাঁধে চেপে সাংসদ হয়েছেন সুনীল। ওঁদের পায়ের তলায় মাটি নেই, তাই এই ধরনের মন্তব্য করছেন। ক্ষমতায় নেই তাতেই নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে ধমকাচ্ছেন, আগামী দিনে কোনও সুযোগ পেলে বাংলার কী হাল করবেন তা মানুষ বুঝতে পারছে।” সুনীলের এই আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেও মন্তব্য করেছেন প্রসেনজিৎ। এ বিষয়ে সুনীলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমাকে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। আইন সবার জন্য এক হওয়া উচিত।”
সুনীল মণ্ডলের রাজনৈতিক কেরিয়ার গ্রাফ কৌতূহল জাগায়। ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূল হয়ে সদ্য বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন তিনি। ২০১১ সালের নির্বাচনে সিপিএমের সমর্থনে ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে দাঁড়িয়ে বিধায়ক হন। কিছু দিন পরেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূলে যোগ দেন। এর পর ২০১৪ এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন। দলে কাজ করতে পারছেন না— এই অভিযোগ তুলে গত বছরের শেষের দিকে মেদিনীপুরে এক সভায় বিজেপি-তে যোগ দেন তিনি।