Prashant Kishor

Bengal Polls: ভোটে বড় ফ্যাক্টর মোদী, হিন্দুত্ব, বিজেপি-র সংগঠন, মতুয়া: পিকে-র অডিয়ো টেপ ফাঁস

প্রশান্ত কিশোরের দাবি, কথাবার্তার একটা বিচ্ছিন্ন অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘সাহস থাকলে পুরো ক্লিপ সামনে আনুক বিজেপি’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২১ ১১:২৬
Share:

—ফাইল চিত্র। ফাইল চিত্র।

চতুর্থ দফার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) একটি অডিয়ো টেপ সামনে আনলেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভোট কুশলীকে বলতে শোনা গিয়েছে, রাজ্যের ভোটে নরেন্দ্র মোদী, হিন্দুত্ব, মেরুকরণ, অবাঙালি ভোট বড় ফ্যাক্টর। বলতে শোনা গিয়েছে, মতুয়া ভোটের দুই তৃতীয়াংশ এবং সামগ্রিক হিন্দু ভোটের অর্ধেক বা তার বেশি বিজেপি-র পক্ষে পড়বে। আনন্দবাজার ডিজিটাল সেই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি। অমিতের দাবি, ওই অডিয়োটি পিকের ক্লাবহাউস চ্যাটের অংশ। পিকে অবশ্য কার্যত মেনে নিয়েছেন চ্যাটের কণ্ঠস্বরটি তাঁরই।

Advertisement

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রশান্ত শনিবার টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি খুশি, বিজেপি তাদের নেতার কথার চেয়ে আমার চ্যাটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কথার নির্দিষ্ট কিছু অংশ তুলে ধরে উত্তেজিত না হয়ে তাদের পুরো চ্যাটটি প্রকাশ্যে আনা উচিত। আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ১০০ পেরোবে না’। তিনি দাবি করেছেন, অডিয়ো ক্লিপটিতে তাঁর ক্লাবহাউস চ্যাটের অংশবিশেষ কেটে নিয়ে প্রকাশ করেছে। পুরো চ্যাটটি প্রকাশ করা হলে পরিষ্কার হবে তিনি ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন।

অডিয়ো ক্লিপে প্রশান্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ভোট থাকলে তা মোদীর নামে রয়েছে। ভোট থাকলে হিন্দুত্বের নামে রয়েছে। মেরুকরণ, মোদী, হিন্দিভাষী, দলিত এগুলোই ফ্যাক্টর। শুভেন্দু গেল, কী প্রশান্ত কিশোর এল, তা এখানে ধর্ত্যব্যের বিষয়ই নয়। মোদী এখানে জনপ্রিয়।’’ ১ কোটি হিন্দিভাষী এবং ২৭ শতাংশ দলিত ভোটার পুরোপুরি বিজেপি-র সঙ্গে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণের গুরুত্বের কথাও।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সেই সঙ্গে চ্যাটে একটি প্রশ্নের উত্তরে মতুয়া ভোটের গুরুত্বের কথা জানিয়ে প্রশান্ত বলেছেন, ‘‘আমাদের সমীক্ষার হিসেব বলছে, লোকসভা নির্বাচনের মতো একতরফা না হলেও এখনও মতুয়া ভোটের ৭৫ শতাংশ বিজেপি-র পক্ষে এবং ২৫ শতাংশ তৃণমূলের পক্ষে যাবে।’’

তাঁদের সমীক্ষার ফল সম্পর্কে প্রশান্ত বলেন, ‘‘আমরা ভোটারদের কাছে মূলত দু’টি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম— প্রথমত, আপনি কাকে ভোট দেবেন। দ্বিতীয়ত, কে সরকার গড়বে। ‘কে সরকার গড়বে’ এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে অধিকাংশই উত্তর দিয়েছেন, ‘বিজেপি’।’’ কেন এমন উত্তর এসেছে তারও ‘ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রশান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা বিজেপি-কে ভোট দেবেন, তাঁরা তো বলছেনই, এমনকি বামেদের পক্ষে যে ১০-১৫ শতাংশ ভোটদাতা রয়েছেন তাঁদেরও দুই-তৃতীয়াংশ মনে করেন, বিজেপি সরকার গড়তে চলেছে।’’ ওই বাম ভোটদাতাদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর প্রশ্নটাই প্রধান বলে দাবি প্রশান্তের। কারণ, ওই বাম ভোটদাতারা মনে করেন,বিজেপি সরকার গড়লে বামেদের সুদিন ফিরবে।

প্রশান্তের অডিয়ো সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন বলেন, ‘‘বিজেপি-র যে বন্ধু টুইট করেছেন, তিনি পুরো অডিয়োটি প্রকাশ না করে অংশবিশেষ প্রকাশ করেছেন। তাঁকে আমার অনুরোধ পুরো অডিয়োটি প্রকাশ করুন। তা হলে আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারি। তা ছাড়া, যাঁকে নিয়ে ওই অডিয়ো, তিনিও একটি টুইট করেছেন। যাতে বলা হয়েছে, বিজেপি-র আসন ১০০ পেরোবে না।’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে পশ্চিমবঙ্গের বুথে বুথে বিজেপি-র সংগঠন দুর্বল। কিন্তু তা মানতে চাননি প্রশান্ত। চ্যাটে তিনি বলেছেন, ‘‘তৃণমূল স্তরে বিজেপি-র প্রচুর নিষ্ঠাবান কর্মী আছেন। হতে পারে তাঁরা বাম থেকে বিজেপি-তে এসেছেন। কিন্তু এখন তাঁরা একনিষ্ঠ ভাবে বিজেপি-র হয়েই কাজ করছেন। একটি-দু’টি জায়গা বাদ দিলে পশ্চিমবঙ্গের এমন কোনও এলাকা নেই, যেখানে বিজেপি-র প্রচুর নিষ্ঠাবান কর্মী নেই।’’

কিন্তু এমন পরিস্থিতি হলে তৃণমূল কত ভোট পেতে পারে? প্রশান্তের জবাব, ‘‘আমার হিসেবে বিজেপি ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ হিন্দু ভোট পাবে।’’ এর পরেই কেটে গিয়েছে, অডিয়ো ক্লিপের কথোপকথন। আর, সেখান থেকেই শুরু হয়েছে প্রশান্তের ‘সাফাই’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement