নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে খারাপ ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার রাজ্যে তাঁর দ্বিতীয় সভা গঙ্গরামপুর থেকে মোদী অভিযোগ তোলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মমতা এমন ভাষা ব্যবহার করছেন, তা মুখে আনা যায় না। বাধ্য হয়ে তিনি তা বলছেন জানিয়ে জনসভায় সেই গালি উল্লেখও করেন মোদী।
গঙ্গারামপুরের জনসভায় ‘গঙ্গা’ এবং ‘রাম’ নামের যোগ নিয়ে বক্তব্য শুরু করেন মোদী। কিন্তু বক্তৃতা একটু এগোতে না এগোতেই ‘দিদি, ও দিদি’ ডাক দিয়ে মমতাকে আক্রমণ শুরু করে দেন। তোষণ আর ভোটব্যাঙ্কের জন্য ‘রামধনু’কে দিদি ‘রংধনু’ করেছেন বলে অভিযোগ করেন মোদী। এর পাশাপাশি অন্য সভার মতো শনিবারও ‘ভাইপো’, ‘তোলাবাজি’ ইত্যাদি প্রসঙ্গে আক্রমণ শানান তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘ভাইপোর কেরিয়ার তৈরি করতে দিদি বাংলার যুবকদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছেন।’’ তবে মোদীর বক্তব্যের একটা বড় অংশ জুড়েই ছিল তাঁর সম্পর্কে মমতার বিভিন্ন ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের কথা। মোদী বলেন, ‘‘দিদি বলেছেন আমায় কান ধরে ওঠবোস করাবেন। আমি বলছি, তোলাবাজ, সিন্ডিকেটবাজ আর প্রিয় ভাইপোকে ওঠবোস করালে আজ দিদিকে এই দিন দেখতে হত না।’’
এর পরেই মোদী রীতিমতো তারিখ ধরে ধরে মমতার মন্তব্যের তালিকা পেশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশ এবং বুদ্ধিজীবীরা শুনুন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কী কী বলেছেন দিদি।’’এর পরে তিনি বলতে শুরু করেন, ‘‘১৯ মার্চ দিদি বলেছেন তিনি মোদীর মুখ দেখতে চান না। সেই সঙ্গে লুটেরা, দুর্যোধন, দুঃশাসন ইত্যাদি নানা কথা বলেছেন। ২০ মার্চ আমায় শ্রমিকদের হত্যাকারী, দাঙ্গাবাজ বলেছেন। ২৪ মার্চ বলেছেন, আমি মিথ্যুক, আমি সিন্ডিকেট চালাই।’’
এর পরে ২৫ মার্চ মমতা কী বলেছেন সেটা উল্লেখ করার আগে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন মোদী। বলেন, ‘‘এই কথা আমি বলতে চাই না। কিন্তু সংস্কৃতিবান মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বাধ্য হয়েই বলছি যে, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিদি বলেছেন, ‘তুম শালা খুনি কা রাজা, খুনি কা জমিদার’। ২৬ মার্চ বলেছেন মোদীর স্ক্রু ঢিলা হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘৪ এপ্রিল দিদি আমাকে, ‘ভগবান ও সুপার হিউমান’ বলেছেন এবং ১২ এপ্রিল ‘দাঙ্গাবাজ’ বলে গালি দিয়েছেন। ১৩ এপ্রিল বলেছেন ‘মোদী সবচেয়ে বড় মিথ্যুক’ এবং ‘বোকা’ বলেছেন।’’মোদীর দাবি, বাংলার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্যই তাঁকে এই গালি শুনতে হয় এবং সে সব শুনেও তিনি প্রশ্ন তুলে যাবেন। মোদী বলেন, ‘‘এই গালি শুধু প্রধানমন্ত্রীর অপমান নয়। এটা বাংলার অপমান। বাংলার সংস্কৃতি, মিষ্টি বাংলা ভাষা এবং বাংলার পরম্পরারও অপমান।’’