অঘটন: নৈহাটিতে গুলিবিদ্ধ মিঠুন পাসোয়ান। নিজস্ব চিত্র।
ব্যারাকপুর এবং বারাসত (২) ব্লকে নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, হিংসা ও সন্ত্রাসের ঘটনা তত বেশি করে ঘটছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলা ও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
রবিবার রাতে দু’জায়গায় দু’টি ঘটনায় ফের আক্রমণের নিশানা হয়েছেন বিরোধী দলের লোকজন। ওই রাতে নৈহাটিতে গুলিবিদ্ধ হন মিঠুন পাসোয়ান নামে এক বিজেপি কর্মী। তিনি স্থানীয় রামকৃষ্ণ মোড় এলাকার বাসিন্দা। ওই ঘটনার পরে মিঠুনের আত্মীয়দের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই ওই হামলা চালিয়েছে। জখম মিঠুন বর্তমানে কলকাতার বাইপাসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মিঠুনের ভাই জিতেন্দ্র জানান, রবিবার রাতে নৈহাটির বিজেপি প্রার্থী ফাল্গুনী পাত্রের সঙ্গে তাঁর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মিঠুন। সেই সময়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সেখানে চড়াও হয়। চারটি গুলি চালায় তারা। মিঠুনের হাতে গুলি লাগে।
যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নস্যাৎ করে নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘যত দূর শুনেছি, মত্ত অবস্থায় দু’তরফের মধ্যে গোলমালের জেরেই এই ঘটনা।’’ রবিবার গভীর রাতে ভাটপাড়া এলাকাতেও বিজেপির দলীয় কার্যালয় লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্য দিকে, রবিবার রাতে বারাসত (২) ব্লকে আইএসএফের ১০ জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। কাউকে রড দিয়ে তো কাউকে চপার দিয়ে মারা হয়। অভিযোগ, শাসন এবং দত্তপুকুর, দুই থানার অধীন দু’টি জায়গায় দু’বার আক্রমণ করা হয় আইএসএফের কর্মীদের। দলের রাজ্য সভাপতি শিমুল সোরেনের অভিযোগ, ‘‘দু’টি থানাই তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছে। বিশেষত, শাসন থানা। আমরা ওই থানার আইসি-কে বদল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করছি।’’ বারাসত পুলিশ জেলার সুপার রাজ নারায়ণ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি।’’
আইএসএফের দাবি, রবিবার রাতে হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শাসনের দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানিকপুরের একটি আমবাগানে তাদের নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চলছিল। সেই সময়ে কর্মীদের উপরে হামলা চালানো হয়। আইএসএফের কীর্তিপুর ২ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি হাফিজুল মিনে জানান, আহতদের মধ্যে দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর দাবি, তৃণমূলের ভয়ে বাকি আহতদের উদ্ধার করা যায়নি।
ওই রাতেই দেগঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রের দত্তপুকুরের লক্ষ্মীপুরে আইএসএফ কর্মীদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। সেখানেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইএসএফ কর্মীদের উপরে আক্রমণ চালানো হয়।