প্রতীকী ছবি।
আবেদন-নিবেদন ও প্রচার সমানে চলেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ভোটে কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে আদালতের ক্ষোভের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। সোমবারেই মাদ্রাজ হাইকোর্ট কার্যত তুলোধোনা করেছে কমিশনকে। তবু সোমবার সপ্তম দফার ভোটেও কোভিড বিধি পুরোপুরি মানতে দেখা গেল না অনেক রাজ্যবাসীকেই।
যদিও প্রশাসনের একাংশের দাবি, আগের বিভিন্ন পর্বের ভোটের তুলনায় এ দিনের পরিস্থিতি ভাল ছিল। বহু জায়গাতেই ভোটারেরা মাস্ক পরে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। দূরত্ব-বিধি ভাঙতে দেখলেই সতর্ক করেছেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। এ দিন দক্ষিণ কলকাতার বন্দর, রাসবিহারী, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ লিয়ে ৩৪টি আসনে ভোট হয়েছে। তুলনায় শহরের বাসিন্দাদের অনেক বেশি করোনা বিধি মানতে দেখা গিয়েছে।
উল্টো ছবি মুর্শিদাবাদে। সেখানে লালগোলা রঘুনাথগঞ্জের কাটাখালি পুঠিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বুথে রাজ্য সড়ক থেকে ভোটারদের লাইন এঁকেবেঁকে ভিতরে চলে গিয়েছিল। বালাই ছিল না দূরত্ব-বিধির। অধিকাংশ ভোটারের মুখে মাস্ক থাকলেও জায়গার অভাবে তাঁরা পরস্পরের গা ঘেঁষে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছিলেন। বিদ্যালয়ে অপরিসর ভবনে চারটি বুথ। সকালেই লাইনে হাজারখানেক ভোটার। রঘুনাথগঞ্জ, লালগোলা, মুর্শিদাবাদ, নবগ্রাম, সাগরদিঘি, রানিনগর— সর্বত্র একই ছবি। মালদহের গঙ্গারামপুর কেন্দ্রের নন্দনপুরের একটি বুথে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ভোটারেরা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুলিশ পর্যবেক্ষক ঢুকতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। সকলকে দূরে দূরে দাঁড় করিয়ে দেয় তারা। পর্যবেক্ষক ফিরে যেতে অবস্থা ফের যে-কে-সেই। মালদহের বিভিন্ন কেন্দ্রে বুথের সামনে গোল দাগ করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ভোটারদের লাইনও দেখা গিয়েছে। কিন্তু যতই লাইন এগিয়েছে, ততই ঠাসাঠাসি বেড়েছে। কমেছে দূরত্ব-বিধি পালনের প্রবণতা। বুথের থেকে দূরে রাজনৈতিক দলের শিবিরে মাস্ক ছাড়াই ঘুরতে দেখা গিয়েছে কর্মীদের।
আসানসোলের বাঁশপাহাড়ির ১৫২ বুথে গিয়ে দেখা গেল, যাঁরা মাস্ক পরেননি, তাঁদের মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। তবে গ্লাভস না-পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক ভোটার। কিছু পরে এক জন সেক্টর আধিকারিক এসে নিজের গাড়ি থেকে এক গুচ্ছ গ্লাভস দিয়ে যান। দুর্গাপুর, জামুড়িয়া, অণ্ডাল, পাণ্ডবেশ্বরের কিছু বুথে দেখা গিয়েছে, যাঁরা দূরত্ব-বিধি মানছেন না, তাঁদের লাঠি দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সব বুথে হাতশুদ্ধি ও গ্লাভস দেওয়া হয়েছে। দূরত্ব-বিধি মেনে চলার জন্য সব জায়গায় গোল চিহ্ন করা ছিল। কোভিড-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে পুলিশ বিশেষ ভাবে কাজ করছে। তিন জনের বেশি ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’