West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: পুতুলের দেশে মুকুল, মোদীর আশীর্বাদ নিয়ে ঝাঁপাচ্ছেন বিধানসভা ভোটের ময়দানে

নদিয়া জেলায় লোকসভা ভোটে ফুটে-ওঠা পদ্মবন রক্ষার লড়াইয়ে নামানো হল মুকুল রায়কে। বুধবার রাতভর বৈঠকের পর এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত জেনেই দিল্লি থেকে ভোরে কলকাতায় ফিরেছেন মুকুল। নদিয়ার জেলার কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করারও তোড়জোড় চলছে। মুকুলের নিজের যদিও প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। কারণ, তিনি অন্তরালের সংগঠক হিসেবে কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে জানান, নদিয়া জেলায় মুকুলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। সূত্রের খবর, মুকুল তা মেনে নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় মুকুল ছিলেন। কলকাতা থেকে বিশেষ হেলিকপ্টারে মুকুল এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ১০:৩৪
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।

নদিয়া জেলায় লোকসভা ভোটে ফুটে-ওঠা পদ্মবন রক্ষার লড়াইয়ে নামানো হল মুকুল রায়কে। বুধবার রাতভর বৈঠকের পর এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত জেনেই দিল্লি থেকে ভোরে কলকাতায় ফিরেছেন মুকুল। নদিয়ার জেলার কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করারও তোড়জোড় চলছে। মুকুলের নিজের যদিও প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। কারণ, তিনি অন্তরালের সংগঠক হিসেবে কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে জানান, নদিয়া জেলায় মুকুলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। সূত্রের খবর, মুকুল তা মেনে নিয়েছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় মুকুলের থাকার কথা। বস্তুত, কলকাতা থেকে বিশেষ হেলিকপ্টারে মুকুল এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পুরুলিয়ায় যাওয়ার কথা। সেখানে মোদীর আশীর্বাদ নিয়ে নদিয়া জেলায় ঝাঁপিয়ে পড়বেন মুকুল। নিজের আসন জেতায় মনোযোগ দিতে হবে তাঁর।

নীলবাড়ি দখলে মরিয়া বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিধানসভা ভোটে তাঁদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে চাইছেন। সে কারণেই তাঁরা চাইছেন, রাজ্যের প্রায় সমস্ত নেতাই যেন ভোটে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। যে কারণে, একাধিক সাংসদকেও তাঁরা বিধানসভায় প্রার্থী করেছেন। মুকুলও সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ। তৃণমূলে থাকার সময় রাজ্যের সব জেলাতেই মুকুলের তৃণমূল স্তরে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু তার মধ্যেও উত্তর ২৪ পরগনার লাগোয়া নদিয়া জেলার সংগঠনে মুকুলের ‘প্রভাব’ আছে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই তাঁকে ওই জেলায় প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নদিয়ায় মোট বিধানসভা আসনের সংখ্যা ১৭টি। তার মধ্যে গত লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি এগিয়েছিল ১১টি আসনে। তৃণমূল ৬টি আসনে। ফলে সে অর্থে নদিয়া বিজেপি-র জন্য ‘ইতিবাচক’ জেলা। নদিয়ার হাল ফেরাতে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়াকেই জেলা সভাপতি করেছেন তিনি। মহুয়া চাইছেন অন্তত ১৩-১৪ আসন যাতে নদিয়া থেকে পাওয়া যায়। এবার মুকুল আসরে নামলে সরাসরি তাঁর টক্কর হবে মহুয়ার সঙ্গে।

মুকুলকে প্রথমে কৃষ্ণনগর দক্ষিণে প্রার্থী করার কথা ভাবা হয়েছিল। ২০১৯ সালে ওই আসনটিতেও এগিয়েছিল বিজেপি। ভোট শতাংশের হিসেবে তাদের সঙ্গে তৃণমূলের ফারাক ছিল ৩ শতাংশের আশেপাশে। ভোটের হিসেবে বিজেপি এগিয়েছিল ৭,০০০-এর কিছু কম ভোটে। পক্ষান্তরে, কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে বিজেপি-তৃণমূলের ভোটের ফারাক ছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। দু’দলের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল সাড়ে ৫৩,০০০। ফলে কৃষ্ণনগর দক্ষিণের চেয়ে কৃষ্ণনগর উত্তর আসনটি মুকুলের পক্ষে আরও ‘নিরাপদ’। সেই কারণেই মুকুল ভোটে লড়া নিয়ে বিশেষ আপত্তি তোলেননি বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর।

ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে। পিছিয়ে-থাকা আসনে গ্ল্যামার দিয়ে যদি জেতা যায়। তবে মুকুল সেখানে দাঁড়ালে কৌশানীর পক্ষে লড়াই খানিক কঠিন হবে বলে তৃণমূলের নেতারাও একান্ত আলোচনায় স্বীকার করে নিচ্ছেন। এমনিতে মুকুলের ভোটে লড়ার ইতিহাস খুব ‘সুখকর’ নয়। ২০০১ সালে তিনি বিধানসভা ভোটে লড়েছিলেন। কিন্তু তার ফলাফল মুকুল-ঘনিষ্ঠরা ভুলে যেতেই চাইবেন।

প্রসঙ্গত, মুকুলের পাশাপাশি টিকিট পাচ্ছেন তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়ও। তিনি উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরের বিধায়ক। বিজেপি সূত্রের খবর, মুকুলের ভোটে লড়ার বিষয়ে প্রাথমিক আপত্তি থাকার কারণ ছেলের আসন নিয়ে তাঁর উদ্বেগ। যদি বিজেপি পিতা-পুত্রকে একসঙ্গে টিকিট না দেয়! কিন্তু নাটকীায় কোনও পট পরিবর্তন না ঘটলে বীজপুরে শুভ্রাংশুকে টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। কারণ, তিনি সেখানকারই বিধায়ক। ফলে সেদিক দিয়েও মুকুল নিশ্চিন্ত। তবে তৃণমূলে থাকার সময় যেভাবে তিনি পিছনের সারিতে থেকে গোটা ভোটটা পরিচালনা করতেন বা গত লোকসভা ভোটের সময়েও বিজেপি-র হয়ে করেছেন, এবার প্রার্থী হলে মুকুলের পক্ষে তা করা সম্ভবপর হবে না। কারণ, প্রথমত, লোকসভা ভোটে নদিয়া জেলার ভাল ফলাফল তাঁকে ধরে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, রণকৌশল ভাবতে হবে নিজের আসন নিয়েও। তবে আসনটি ‘নিরাপদ’ বলেই মনে করছেন মুকুল-ঘনিষ্ঠরা।

মোদীর আশীর্বাদ নিয়ে সেই লড়াইয়ে নামতে চাইছেন মুকুল। নদিয়ায় ভোট ১৭ এবং ২২ এপ্রিল। ফলে মুকুলের যুদ্ধ আপাতত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত নদিয়ায়। ঘটনাচক্রে, উত্তর ২৪ পরগনাতেও ভোট ওই দু’দিনেই। তার মধ্যে মুকুল-তনয় শুভ্রাংশুর আসন বীজপুরে ভোট ২২ এপ্রিল। ফলে মুকুল তাঁর ‘সক্রিয়’ সহায়তা দিতে পারবেন না শুভ্রাংশুকে। এখন দেখার, পিতা-পুত্রের জুটি বিধানসভা ভোটে কী করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement