ফাইল চিত্র।
২২ আসনের মুর্শিদাবাদে এ বারের ভোটে প্রত্যাশা যে বেশি, তা বারবারই স্পষ্ট করেছে তৃণমূল। প্রথম দফার ভোটের আগে ভার্চুয়াল প্রচারে এসেও খোলামেলা সেই বার্তা দিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বরাবর কংগ্রেস ও বামেদের দিকে ঝুঁকে থাকা এই জেলায় গত কয়েক বছর ধরে নানা ভাবে সাংগঠনিক শক্তি বাড়িয়েছিল তৃণমূল। তাই এ বারের নির্বাচনে প্রত্যাশাও ছিল তুলনায় বেশি। কিন্তু এই জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে চলে যাওয়ায় তা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তা দূর করতে এ দিন বহরমপুরে এক গুচ্ছ সাংগঠনিক পদক্ষেপ করতে হল মমতাকে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃণমূল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ দখল করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কমিশনের নয়া নির্দেশে কোভিড বিধি মেনে ৪০০ কর্মী নিয়ে এ দিন রবীন্দ্রসদনে বৈঠক করেন মমতা। বক্তব্যের শেষে দলের বিক্ষুব্ধ কর্মী, যাঁরা হয় দল বদল করেছেন না হয় দলের বিরোধিতা করছেন, তাদের বরখাস্ত করার কথা জানান তিনি। তৃণমূলনেত্রী বলেন, “যারা আমাদের দলের প্রতীকে জিতে বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি ভাবে ভোটের প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের সবাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। যারা যারা অন্য প্রার্থীদের হয়ে কাজ করছেন, তাঁদেরকেও বরখাস্ত করা হল। বিধানসভা ভোটের পরে আমরা জেলা পরিষদ দখল করে নেব।”
বিধানসভা নির্বাচন না থাকলে এত দিনে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী, বর্তমানে কংগ্রেস নেতা জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনত তৃণমূল। বিধানসভা ভোট চলাকালীন একই কারণে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস, দুই কর্মাধ্যক্ষ মইদুল ইসলাম ও আনারুল শেখ, জেলা পরিষদের সদস্য নাসির শেখ, দ্রৌপদী ঘোষ, সীমা চৌধুরী-সহ একাধিক জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত প্রধান সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘শো-কজ’ ছাড়া কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেননি জেলা নেতারা। এ দিন মমতা তাঁদের বরখাস্ত করায় এটা স্পষ্ট যে, ভোট মিটলে জেলা পরিষদ দখল করতে নামবে তৃণমূল। যদিও জেলা পরিষদ দখল তাঁদের শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করেছেন জেলা কংগ্রেসের নেতারা।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জেলার ২২ বিধানসভা প্রার্থীদের দূরত্ব-বিধি মেনে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ১১ জন প্রার্থীকে শেষ পর্যন্ত জেলাবাসীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরেছেন মমতা। অন্য প্রার্থী যাঁদের এলাকায় আজ নির্বাচন আছে, তাঁরা নিজের এলাকায় থাকায় ওই বৈঠকে অংশ নিতে পারেননি। দলের জেলা সভাপতি-সহ কোর কমিটির তিন নেতা খলিলুর রহমান, মইনুল হাসান, মহম্মদ সোহারবই মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে ছিলেন। জেলার অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস-সহ একাধিক জেলা নেতারাও দূরেই ছিলেন।