কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবির শঙ্কর বসু।
আত্মরক্ষার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজনে গুলি চালাতে পারে, সোমবার নির্বাচন কমিশন এমন বার্তা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদীরা ভয় পেয়েছেন বলেই বাংলায় গুলি চালিয়ে ভোট করতে চাইছেন। যদিও বিজেপির দাবি, কমিশন কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। কল্যাণ মাঝে মধ্যেই এমন ‘উল্টোপাল্টা’ কথা বলে থাকেন। ভোটের সময় কমিশনের ক্ষমতার কথা যদি তাঁর জানা না থাকে, তবে যেন তিনি আইনের বইগুলি আরও একবার পড়ে নেন।
শ্রীরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ্ত রায়ের প্রচার মিছিলে এসেছিলেন কল্যাণ। সেখানেই কমিশনের আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর নির্দেশ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘এগুলো অমিত শাহ করাচ্ছে, যাতে গুলি চালিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কর্মীদের মারতে পারে। অমিত শাহ বুঝে গিয়েছে পশ্চিমবাংলায় বিজেপির অবস্থা খুব খারাপ। তাই ইলেকশন কমিশন কে দিয়ে গুলি চালাবে বলেছে।’’ কল্যাণের দাবি, ‘‘ওরা হারবে তাই এ সব করছে। কিন্তু আমরা বিজেপিকে গুন্ডাবাজি করতে দেব না। ইলেকশন কমিশন যা বলেছে, তা আসলে নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের কথা। ইলেকশন কমিশন শুধু মুখ দিয়ে উচ্চারণ করেছে। অমিত শাহ আর নরেন্দ্র মোদী ভয় পেয়েছে বলে পশ্চিমবাংলায় গুলি চালিয়ে নির্বাচন করতে চাইছেন। আসলে গুলি চালানোর কথা কমিশনকে দিয়ে বলিয়েছেন অমিতই।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে ওসি জখমের ঘটনায় সোমবারই বাংলাকে কড়া বার্তা দিয়েছে কমিশন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই খবর সামনে এসেছে। পটাশপুরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানও জখম হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, এর পর কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলার ঘটনা বরদাস্ত করবে না বলে বার্তা দিয়েছে রাজ্যকে। আত্মরক্ষার্থে প্রয়োজনে পাল্টা গুলি চালাতে পারে তারা এমন নির্দেশও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। সে প্রসঙ্গেই মঙ্গলবার ওই প্রতিক্রিয়া দেন কল্যাণ।
পাল্টা শ্রীরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কবির শঙ্কর বসু বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা। তার উপর কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। কল্যাণবাবু না জানলে ভালো করে আইনের বইটা পড়ে নিন।’’
দুই বক্তা প্রাক্তন শ্বশুর-জামাই। কল্যাণ শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। আর তাঁর প্রাক্তন জামাই কবির শঙ্কর এ বারের বিধানসভা ভোটে শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী। ভোট ঘোষণার পর থেকেই দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলছে। এ বার কমিশনের গুলি চালানোর বার্তা প্রসঙ্গেও চলল আরেক প্রস্থ কাদা ছোড়াছুড়ি।
কবির শঙ্কর প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থীর বাবাকে কেউ চেনে না, সব জায়গায় প্রাক্তন শ্বশুরের পরিচয় দেয়। ও রাজনীতির কিছু বোঝে না ওকালতিরও কিছু বোঝে না। বাবা-ছেলে মিলে শুধু মামলা করে বেড়ায়। এ বার শ্রীরামপুরে হারলে কোথায় যায় দেখব।’’
পাল্টা কবির শঙ্করকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘শ্রীরামপুরে তৃণমূল হারবে বলে উল্টোপাল্টা বকছেন। উনি প্রায়শই এমন কথা বলেন। ওর মাথার ঠিক নেই।’’