কাঞ্চন মৈত্র। নিজস্ব চিত্র
এর আগে দুটো বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে দাঁড়ানো কাঞ্চন মৈত্রকে চাপড়ায় প্রার্থী হিসেবে মানতে নারাজ আইএসএফ-এর স্থানীয় নেতাকর্মীরাই। সোমবারই দলেরশীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। জোটসঙ্গী বামেরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাদের তরফেও এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আইএসএফের চাপড়া ব্লক কমিটির আহ্বায়ক ফরজ আলি মোল্লা বলছেন, “আমরা চেয়েছিলাম এক জন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির শিক্ষিত ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে প্রার্থী করা হোক। কাঞ্চন মৈত্র চাপড়া থেকেই বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। ওঁকে মানতে আমাদের অসুবিধা আছে। আমরা শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলছি।” এ দিনই তাঁরা কথা বলতে কলকাতায় গিয়েছেন।
দমদম বিদ্যামন্দির স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন মৈত্রের আদি বাড়ি চাপড়ার ডাংনায়। বেড়ে ওঠা কৃষ্ণনগরে, বর্তমানে থাকেন বিধাননগরে। ছাত্রাবস্থা থেকে যুক্ত ছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে। এক সময়ে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্যও ছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০০১ সালে চাপড়া কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হন এবং পরাজিত হন। ২০০৬ সালের ভোটে আবার শান্তিপুর কেন্দ্র বিজেপি প্রার্থী হারেন এবং পরের বছর কংগ্রেসে ফিরে যান। তার পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে প্রায় সরেই গিয়েছিলেন। আব্বাস সিদ্দিকি-র আইএসএফ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে তিনি সক্রিয় ভাবে যুক্ত, বর্তমানে দলের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য। সোমবারই তিনি চলে এসেছেন কৃষ্ণনগরে। তাঁর দাবি, “এমন বিতর্কের কথা আমার জানা নেই। বিজেপির প্রার্থী হওয়া মানেই সাম্প্রদায়িক এমন ভাবার কারণ নেই। আর বিজেপির ধর্মীয় অবস্থান মানতে পারিনি বলেই তো দল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম।”
গত বিধানসভা ভোটে চাপড়া কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিএম। এ বার তারা আসনটি আইএসএফ-কে ছেড়ে দিয়েছে। কংগ্রেস আবার প্রথম থেকেই চাপড়া কেন্দ্রটি দাবি করে আসছে। আইএসএফ-কে তারা মানতে নারাজ। সিপিএম আগে থেকেই আইএসএফ-কে সঙ্গে নিয়ে প্রচারে বেরোচ্ছিল। প্রার্থী দেখে তারাও থমকে গিয়েছে। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “কাঞ্চনবাবুকে আমরা প্রার্থী হিসাবে মানতে পারব না। যিনি একাধিক বার বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না।”
সিপিএম সূত্রের খবর, জেলার তরফে রাজ্য নেতৃত্বকে আপত্তির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “আনুষ্ঠানিক ভাবে আইএসএফের প্রার্থী তালিকা আমরা এখনও পাইনি। ফলে এখনই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”