(বাঁ দিকে) ভাঙচুর ও (ডান দিকে) দফতরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় মুরারই ব্লক কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন কংগ্রেসের কর্মীরাই। কার্যালয়ের দরজা, জানলা, টেবিল ভাঙচুরের পাশাপাশি নেতা, কর্মীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে। জেলা ও রাজ্য সভাপতিকে এনে সমস্যার সমাধানের দাবিতে সকাল দশটা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা তালা বন্ধ করে রাখা হয়। মুরারই থানার ওসি বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে আটকে থাকা প্রহৃত কর্মীদের উদ্ধার করে মুরারই হাসপাতালে পাঠায়।
জেলার নানা প্রান্তেই প্রার্থী নিয়ে বিভিন্ন দলে ক্ষোভের পারদ চড়ছে। সোমবার বিজেপির প্রার্থী বদলের দাবিতে মুরারইয়েই কার্যালয়ে তালার পাশাপাশি টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়েছিল। এ দিন কংগ্রেসের বিরোধ সামনে এল। কংগ্রেস কর্মীদের অভিযোগ, ২০ মার্চ প্রার্থী তালিকায় আশিফ ইকবালের নাম ঘোষণা হয়। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছিল। প্রার্থী বদল নিয়ে কর্মীরা কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদের দ্বারস্থ হন। এ দিন কংগ্রেস কার্যালয়ে দলীয় কর্মীরা বৈঠকেও বসেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বৈঠকের মধ্যেই বচসা শুরু হলে কিছু বিক্ষুব্ধ সমর্থক কার্যালয়ের কাঁচের দরজা, জানালা, টেবিল ও চেয়ার ভেঙে ফেলে। বৈঠকে উপস্থিত ব্লক সভাপতি মহম্মদ মোতাহার হোসেন, রাজ্য যুব প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক মহম্মদ মাসিকুল ইসলাম সিবলি ও কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আলী আহমেদ ছাড়াও দুই তিন জন কর্মীকে মারধর করে কার্যালয়ে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এ দিন কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, মেঝেতে রক্তের দাগ। দরজার কাঁচের টুকরো সর্বত্র পরে। পুলিশ কংগ্রেস কর্মীদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পরেও কার্যালয়ে তালা আটকে দেওয়া হয়েছে। যত দিন না প্রার্থী বদল হচ্ছে, তত দিন আন্দোলন চলবে বলেও দাবি বিক্ষুব্ধ কর্মীদের।
ব্লক সভাপতির কথায়, ‘‘প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আমরাও প্রার্থী বদলের জন্য জেলা সভাপতির কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু, এই ভাবে কার্যালয় ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধর করা ঠিক হয়নি। থানায় অভিযোগ জানাব।’’ রাজ্য যুব প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক অবশ্য এই ভাঙচুরের পিছনে তৃণমূলের মদত দেখছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যে সমস্ত দুষ্কৃতীরা আজ ভাঙচুর করেছে, তাদের কখনও দলীয় বৈঠক বা মিছিলে দেখা যায়নি। কংগ্রেসের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই তৃণমূল চক্রান্ত করে এই ভাঙচুর করিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা সামনে আনবে।’’
অঞ্চল সভাপতি আলীর কথায়, ‘‘প্রার্থী নিয়ে বৈঠকের মাঝেই কয়েক জন আমার উপরে চড়াও হয়। তাঁদের আঘাতে মাথা ফেটে যায়। হাতেও আঘাত লেগেছে। পুলিশ উদ্ধার করার পরে হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘তৃণমূল দল করে না। প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে হার নিশ্চিত ভেবে নিজেদের মধ্যেই কংগ্রেস কর্মীরা গোলমাল করছেন।’’ আর প্রার্থী আশিফের জবাব, ‘‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। দল প্রার্থী করেছে। দলের হয়ে সকলে ভোট করে কংগ্রেসের হাত শক্তিশালী করব।’’
বিক্ষুব্ধরা বিষয়টি বুঝে ভোটের প্রচারে নেমে পড়বেন বলে আশাবাদী জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মিল্টল রশিদও। তিনি বলছেন, ‘‘কয়েক জন এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। তবে প্রার্থী বদল হবে না। কেননা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী বেছেছএন। দিন দুয়েকের মধ্যে বিক্ষুদ্ধরাও ভোট প্রচারে নামবেন।’’