West Bengal Assembly Election 2021

পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে এ বার প্রধান সচিবও

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ০৭:০১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

যুগ্ম বা অতিরিক্ত সচিবদেরই এত দিন বিভিন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হত। কিন্তু এ বার খানিকটা রীতি ভেঙেই প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বা প্রধান সচিব, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদের অফিসারদেরও পর্যবেক্ষকের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আসন্ন ভোটে অতি সংবেদনশীল এলাকাগুলির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খুব সিনিয়র অফিসারদের অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

Advertisement

ঠিক হয়েছে, রীতিমতো পাঠ পড়িয়েই রাজ্যে রাজ্যে পর্যবেক্ষকদের পাঠাবে কমিশন। আলাদা বৈঠক করে কমিশন-কর্তারা ভোটে নজরদারির ব্যাপারে নিজেদের ভাবনা ও চূড়ান্ত কৌশল বুঝিয়ে দেবেন তাঁদের। এই নিয়ে আজ, বুধবার বৈঠকে ডেকেছে কমিশন। যে-সব আইএএস এবং আইপিএস অফিসার ভোটে সাধারণ বা পুলিশ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদেরও সেই বৈঠকে ডাকা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রের খবর।

প্রশাসনিক মহলের খবর, সাধারণ ভাবে ৫০ বছর বয়স হয়ে গেলে এবং প্রধান সচিব বা অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে কর্মরত আইএএস অফিসারদের ভোট-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু এ বারের ‘ভিন্ন’ পরিস্থিতিতে সেই রীতি-রেওয়াজ পাল্টে তাঁদেরও পর্যবেক্ষকদলে শামিল করছে কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ব্যাখ্যা, এ বারের ভোট বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে বলেই কমিশন এই ধরনের সিনিয়র অফিসারদের বেছে নিয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের অব্যাহতি দিতে কমিশনকে অনুরোধ করতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনও দ্বিধাগ্রস্ত। অনেকেই মনে করছেন, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ করে এই কৌশল তৈরি করেছে কমিশন। তামিলনাড়ুতে আর্থিক দিক থেকে অনেক স্পর্শকাতর এলাকা রয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কমিশনের প্রধান দুশ্চিন্তা আইনশৃঙ্খলা।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, পাঁচটি রাজ্যে এমন অনেক বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলির চরিত্র বেশ জটিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা আর্থিক গতিবিধির দিক থেকে সেগুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতরও। সেই সব বিধানসভা কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কমিশন এমন অফিসারদের দায়িত্ব দিতে চাইছে, যাঁদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং নিজেদের কর্মজীবনে যাঁরা এই ধরনের অনেক কাজকর্ম করে এসেছেন। ‘‘জটিল পরিস্থিতিতে কী ভাবে নজরদারি চালাতে হয়, বা নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়, সেই কাজে জুনিয়রদের তুলনায় সিনিয়র অফিসারেরা বেশি অভিজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতাকেই এ বার কাজে লাগানো হবে। সাধারণ বিধানসভা কেন্দ্রে অবশ্য তুলনায় জুনিয়র অফিসারেরাই পর্যবেক্ষক হবেন,’’ বলেন কমিশনের এক কর্তা।

আজকের বৈঠকটিকে এতটাই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যে, তার জন্য পৃথক ভাবে এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে (সিইও)। এমন নোডাল অফিসারের নাম কমিশনকে আগে থেকে জানাতে হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের তালিকাভুক্ত প্রত্যেক অফিসারের ওই বৈঠকে থাকা বাধ্যতামূলক। আগাম না-জানিয়ে কেউ বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করতে পারে কমিশন।

বৈঠকে কমিশন শুধু পাঠ দিয়েই কাজ শেষ করবে না। পর্যবেক্ষকদের জন্য আলাদা পোর্টালও তৈরি করেছে তারা। কমিশন-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে পর্যবেক্ষকেরা নিজেদের ইউজ়ার-আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সেই পোর্টালে ঢুকলে তা সক্রিয় হয়ে যাবে। প্রত্যেক পর্যবেক্ষকের উদ্দেশে কমিশনের পরামর্শ, ওই পোর্টালে নিয়মিত নজর রাখতে হবে। সেখানেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ জানাবে কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement