—ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে গিয়ে নাজেহাল দশা বিজেপি নেতৃত্বের। শেষ চার দফার নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে দিল্লিতে আজ দলের সভাপতি জে পি নড্ডার বাড়িতে বেলা ১১টা থেকে টানা সাত ঘণ্টা বৈঠক হয়। আগের বৈঠকে আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ। দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও এ দিনের বৈঠকে তিনি যাননি।
বিধানসভা ভোটের তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ৭৫টি আসনের মধ্যে ৬৩টি আসনের প্রার্থী তালিকা গত রবিবার ঘোষণা করেছিল বিজেপি। বাকি ১২টি আসনের মধ্যে ছিল তৃতীয় দফার চারটি আসন। সেই চার আসনের প্রার্থী বুধবার ঘোষণা করেছে বিজেপি। চলচ্চিত্র জগৎ থেকে আরও এক জনকে প্রার্থী করল তারা‒ পাপিয়া অধিকারী। লড়বেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ থেকে। বারুইপুর পূর্ব, ফলতা এবং জগৎবল্লভপুরে প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে চন্দন মণ্ডল, বিধান পাড়ুই এবং অনুপম ঘোষ। অনুপম যুব তৃণমূলের হাওড়া জেলার সভাপতি ছিলেন। কিছু দিন আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
গত রবিবার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার তালিকা প্রকাশিত হতেই রাজ্য বিজেপিতে শুরু হয় গোষ্ঠী কোন্দল। বহু জায়গাতেই অন্য দল থেকে সদ্য আসা নেতা বা তারকাদের প্রার্থী করা মেনে নিতে চাননি পুরনো বিজেপি কর্মীরা। কলকাতায় দলের নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে গত ক’দিন ধরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন দলীয় কর্মীরা।
এই আবহে শেষ চার দফার জন্য প্রায় ১৭০ জন প্রার্থীর নাম স্থির করতে নড্ডার বাড়িতে আজ বৈঠকে বসেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। শাহের অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে বিজেপি নেতারা মুখে কুলুপ আঁটলেও, সূত্রের মতে, প্রার্থী বাছাই ঘিরে কোন্দল দেখে, প্রার্থী বাছাইয়ের এই পর্বে তিনি নাক গলাতে চাননি। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ের তালিকা তৈরির বৈঠকে শাহ থাকবেন।
বৈঠকের পরে রাত সাড়ে আটটায় বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ছিলেন শাহ। এর পর রাজ্য নেতাদের নিয়ে শুরু হয় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজ। সূত্রের দাবি, আজ প্রকাশ হতে পারে তালিকা।
সূত্রের মতে, মুকুল দাঁড়ালে (যা নিশ্চিত) পরিবারবাদের কথা মাথায় রেখে ছেলে শুভ্রাংশুকে টিকিট না-ও দেওয়া হতে পারে। কথা হয়েছে রাহুল সিন্হার লড়ার বিষয়টি নিয়ে।
ডোমজুড় থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট পেলেও বালি বিধানসভায় বৈশালীর টিকিট পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশয় রয়েছে। বৈশালীকে সেখান থেকে প্রার্থী করার প্রশ্নে তীব্র আপত্তি রয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। একাধিক কেন্দ্রে প্রার্থী নিয়োগ ঘিরে এ ধরনের একাধিক অভিযোগের স্মারকলিপি সঙ্গে নিয়ে দিল্লির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। বৈঠকে প্রার্থী বাছাই ঘিরে অসন্তোষের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
নড্ডার বাড়িতে ঢোকার আগে দিলীপ ঘোষ জানান, আজই শেষ চার পর্বের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে চায় দল। সূত্রের মতে, দল বুঝতে পারছে, প্রার্থী তালিকা যা-ই হোক, বিক্ষোভ হবেই। তাই এক বার তালিকা প্রকাশ করে বিক্ষোভে জল ঢেলে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন নড্ডা-শাহরা।