অনুগামী: আরাবুলের গাড়ি ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: সামসুল হুদা।
প্রার্থী পদ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত ভাঙড়ে। শনিবার ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার-সহ বেশ কয়েক জায়গায় বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। ‘বহিরাগত প্রার্থী’কে ভাঙড়ের মাটিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরাবুল ইসলামের অনুগামীরা।
এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রেজাউল করিম। তিনি গত লোকসভা ভোটে বীরভূম থেকে বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন। এই ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভ জানাচ্ছেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। তাঁর অনুগামীদের বক্তব্য, ২০১৬ সালে সিপিএম থেকে আসা রেজ্জাক মোল্লাকে ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা থেকে নিয়ে এসে ভাঙড়ের প্রার্থী করা হয়েছিল। রেজ্জাক ভাঙড়ে সময় তো দেনইনি, বরং তাঁর আমলে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে। আরাবুলই এ বার টিকিট পাবেন বলে ধরে নিয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়ে যায়। কিন্তু সেই আশা ধাক্কা খেয়েছে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে।
পেশায় চিকিৎসক রেজাউল করিম আদতে বীরভূমের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে থাকেন বেহালায়। তাঁকে ভাঙড়ের মানুষ চেনেন না বলে ক্ষোভ জানিয়েছে আরাবুল গোষ্ঠী। তবে বহিরাগত প্রার্থী না-পসন্দ আরাবুলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীরও। এ দিন সকাল থেকে বিজয়গঞ্জ বাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের প্রায় অধিকাংশ নেতা উপস্থিত ছিলেন। পরে ছেলে হাকিমুলকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে আসেন আরাবুল। দলীয় কর্মীদের ভিড় ঠেলে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে যান। সেখানে তিনি ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ওহিদুল ইসলাম সহ অন্যান্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এরই মাঝে আরাবুলের ফোনে যোগাযোগ করেন দলের এক জেলা নেতা। তারপরেই আরাবুল কার্যালয় থেকে বেরিয়ে কলকাতার দিকে রওনা দেন। দলের একটি সূত্রের দাবি, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্যই তাঁকে ডাকা হয়েছে।
এ দিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ঘুরছে এ দিন সকাল থেকে। তাতে বলা হয়েছে, ভাঙড় থেকে এমআইএমআই প্রার্থী হচ্ছেন আরাবুল। তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘‘দল ছাড়ার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এমআইএমের সঙ্গে কোনও কথাও হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’
আরাবুল বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্তে ভাঙড়ের মানুষ অখুশি। তাঁরা ভাঙড়ের কোনও ভূমিপুত্রকেই প্রার্থী হিসাবে চাইছেন। বহিরাগত প্রার্থীকে মানা হবে না বলে জানিয়েছেন। যদিও আমি এখনও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। সকলের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।’’
এই পরিস্থিতিতে কী মনে করছেন প্রার্থী রেজাউল?
তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার তৃণমূল ভবনে দল বৈঠক ডেকেছে। সেখানে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হবে। দল আমাকে প্রার্থী করেছে। সেই মত আমি সকলের কাছে যাব। আরাবুল-সহ সমস্ত নেতৃত্বকে আমার প্রয়োজন। সকলের সঙ্গে কথা বলব।’’