প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের অন্দরেও ফাটল বাড়ছে প্রতিদিন। দলের নয়া দীর্ঘ জেলা কমিটি ক্রম হ্রাসমান নেতাদের দল ত্যাগের কারণে। আর তা সামলাতে জেলা তথা রাজ্য নেতাদের কোনও টোটকাই কাজে আসছে না বলে জানান এক জেলা নেতা। দলত্যাগীদের তালিকায় নয়া সংযোজন তৃণমূলের আদি নেতা সাগির হোসেন। সূত্রের দাবি, তাঁর দলত্যাগ এখন সময়ের অপেক্ষা। জল্পনা জিইয়ে সাগির হোসেন বলেন, “এখন দল থেকে আমার অবসর নেওয়ার সময় চলে এসেছে। দিদির সঙ্গে ২৯ বছর থাকলাম। আবার কী?”
অথচ একটা সময় জেলায় তৃণমূলকে তিলে তিলে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে কয়েক জন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ভগবানগোলার সাগির, দাবি দলেরই এক প্রবীণ নেতার।
একুশের ভোটের লড়াইয়ে জেলার ২২ জনকে টিকিট দিয়েছেন রাজ্য নেতারা। আর টিকিটের তালিকায় নিজেদের নাম দেখতে না পেয়ে কিংবা পছন্দের নেতা না মেলায় জেলার একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে ঝিমিয়ে থাকা গোষ্ঠীকোন্দল হঠাৎ মাথা চাড়া দিয়েছে তৃণমূলে। রবিবার বহরমপুর ঋত্বিক সদনে সবাইকে ডেকে গোলাপ দিয়ে অভ্যর্থনা জানানোর পরেও ওই বৈঠকে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান সহ কোর কমিটির অন্য নেতারা। ভিড়ের মধ্যেও কর্মীদের চোখে পড়েনি বেশ কয়েকজন পরিচিত নেতার সঙ্গে তৃণমূলের পুরনো শিক্ষক নেতা শেখ ফুরকানও। সন্ধ্যা হতেই রটে যায় কলকাতার হেস্টিংস রোডের বিজেপির নয়া কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। ফুরকান বলেন, “কলকাতায় আছি। রাজনীতি নিয়ে কোনও কথাই এখন বলব না। পরে বলব।” পাশাপাশি বিক্ষুব্ধদের কেউ গোসা করে খিল তুলেছেন ঘরে। কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিনা প্রতীকেই লড়াই করবার, দাবি সেই সব নেতার অনুগামীদের। এই অবস্থায় তৃণমূলের শতচ্ছিন্ন চাদর বাইরে বেড়িয়ে এসেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে চর্চায় সবার উপরে সাগির হোসেনের নাম। সাগির দল ছাড়লে তার প্রভাব ভগবানগোলা ভোটে পড়বে বলেই মনে করেন তাঁর সময়ের তৃণমূলের এক নেতা। ২০০১ ও ২০০৬ সালে ভগবানগোলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন সাগির। যদিও জিততে পারেননি তিনি। কিন্তু ২০১১ সালে প্রার্থী বদলে আবু সুফিয়ান সরকারকে প্রার্থী করে দল। তিনিও হেরে যান হেভিওয়েট বাম নেতা মহসীন আলির কাছে।
সাগিরের এক অনুগামী বলেন, “তখন সাগিরদা অন্য একটি পদে থাকায় নির্বাচনে লড়াই করেননি। কিন্তু এ বার তাঁর জায়গায় বহিরাগত ইদ্রিস আলিকে প্রার্থী করল দল। দাদার কথা শুনলই না তাঁরা।”
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি মইনুল হাসান বলেন, “এ ব্যপারে আমি কিছু বলব না। গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী পুরনোও নেতা হিসাবে উনি সিদ্ধান্ত নেবেন আশা করি। আমাদের রাজ্যে বিজেপিকে কারও কোনও ভাবেই সাহায্য করা উচিত নয়।”