মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমিত শাহ। ফাইল চিত্র
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বদলে গিয়েছেন। রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের আগের দিন কলকাতায় এসে এমনই অভিযোগ তুললেন অমিত শাহ। একই সঙ্গে অমিতের অভিযোগ, স্বার্থের জন্য বদলে গিয়েছেন মমতা।
প্রথম দফার ভোটগ্রহণ থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সরব তৃণমূল। প্রায় প্রতিটি জনসভা থেকেই মমতা এ নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন। নন্দীগ্রামে ভোটের দিনেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এর পরে গত মঙ্গলবার একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে মমতা টুইটারে লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপব্যবহার চলছেই। উর্দি পরা বাহিনীকে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে প্রকাশ্যে তৃণমূল প্রার্থীদের ভয় দেখতে কিংবা মানুষকে একটি দলে ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করতে। আমরা বারবার এই সব ঘটনা তুলে ধরলেও নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শক’।
এখানেই না থেমে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের একটি প্রচার সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘সিআরপিএফ যদি গন্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল মিলে ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।’’ শুক্রবার সেই প্রসঙ্গে টেনে কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে অমিত বলেন, ‘‘এই মমতাদিদিই অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। সংসদেও সরব হয়েছেন।’’ এর পরেই কিছুটা আক্ষেপের সুরে তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষ কী করে এত বদলে যায়, আমি তো ভাবতেই পারি না!’’ অতীতে মমতা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি চাইতেন বলেও শুক্রবার উল্লেখ করেন অমিত। বলেন, ‘‘এই মমতাদিদি একটা সময় নির্বাচনে রিগিং রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি তুলতেন।’’ এর পরেই তাঁর আক্রমণ, ‘‘স্বার্থের জন্য মানুষ বদলে যায়।’’
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে মূলত রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কোন ক্ষেত্রে কী করবে, সেই ইস্তাহার শোনান অমিত। এর পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘বাংলায় এর আগে গত বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন আমি দেখেছি। সেই ৩টি ভোটের তুলনায় এ বার রাজ্যে হিংসা অনেক কম।’’ ৩ দফার নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে অনেক জায়গায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অনেক সময় তৃণমূলের থেকেও বিজেপি-র অভিযোগ বেশি। অনেক জায়গায় বিজেপি-র সমর্থকেরা বুথে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে অমিত বলেন, ‘‘তৃণমূলের নির্বাচনী পরামর্শদাতা বলে দিয়েছেন, ২ মে যে সাংবাদিক বৈঠক করতে হবে, তার জন্য এখন থেকে এই সব অভিযোগ জানিয়ে রাখতে হবে। হেরে গেলে বলার জন্য এরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর বেশি কিছু নয়।’’ শুধু তৃণমূলকে আক্রমণ করাই নয়, শুক্রবার অমিত দাবি করেছেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে যে ৯১টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে, তার মধ্যে ৬৩ থেকে ৬৫টিতে বিজেপি জিতবে।