বজ্রআঁটুনি: জওয়ানদের ঘেরাটোপে ভোটকেন্দ্র। শীতলখুচির জোরপাটকির আমতলি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ১২৬ নম্বর বুথে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। রাইফেল হাতে বুথের চার দিকে টহল দিচ্ছেন আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। সঙ্গে রয়েছে রাজ্য পুলিশ। স্কুলঘরের ভিতরে ভোটকর্মীরা গুছিয়ে নিতে শুরু করেছেন সব কিছু। সবার চোখমুখেই একটু উদ্বেগের ছাপ। দু-একজন করে গ্রামবাসীও খানিক দূর থেকেই উঁকি দিচ্ছেন বুথের ভিতর। তাঁদের মুখ গম্ভীর। বুধবার বিকেলে শীতলখুচি বিধানসভার জোরপাটকির আমতলি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ১২৬ নম্বর বুথে এমনই চিত্র। বৃহস্পতিবার ওই বুথে পুনর্নিবাচন। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানিয়েছেন, ওই বুথে নির্বাচনের সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিরপত্তায় কোনও খামতি নেই। স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। কোনও সমস্যা হবে না।’’
১০ এপ্রিল কোচবিহারে ভোটগ্রহণ হয়। ওই দিন শীতলখুচির ১২৬ নম্বর বুথে সিআইএসএফের গুলিতে চার জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। সিআইএসএফ দাবি করে, তাদের ঘিরে ধরা হয়েছিল। আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। বাধ্য হয়ে জওয়ানেরা গুলি চালান। গ্রামের বাসিন্দারা অবশ্য দাবি করেন, নিরস্ত্র মানুষের উপরে আচমকা এলোপাথাড়ি গুলি চালান সিআইএসএফের দুই জওয়ান। মাথাভাঙা থানায় দু’পক্ষের তরফেই অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।
ওই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যেও চাপানউতোর শুরু হয়ে। তৃণমূল দাবি করে, বিজেপি সিআইএসএফ জওয়ানদের নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, ওই এলাকার বিজেপির ভোটারদের ভোটদানে বাধা দিয়েছে শাসকদল। ভোটারদের ভয় দেখানো হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে পুনর্নিবাচন নিয়েও দু’পক্ষ ময়দানে নেমেছে।
এ দিন ওই এলাকায় যান তৃণমূলের শীতলখুচি কেন্দ্রের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক রয়েছে। শুধু তাই নয়, চার জন তরতাজা ছেলের এমন মৃত্যু নিয়ে গোটা গ্রাম শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সে বিষয়ে জানিয়েছি। যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়।” ওই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বরেন বর্মণ। মঙ্গলবার সেখানে যান বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা। তিনি বলেন, “মানুষ ভোট দিতে ভয় পাচ্ছেন। তৃণমূল ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। কমিশনকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’