আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। বললেন, সংখ্যালঘুদের বরাবর ভোট ব্যাঙ্কের সুবিধার্থেই ব্যবহার করেছেন মমতা। তাদের জন্য উন্নয়ন করেননি। আর আর আজ যে সিএএ নিয়ে তিনি গলা ফাটাচ্ছেন, এক কালে তারই সমর্থনে কথা বলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী।
সর্বভারতীয় মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) প্রধান ওয়াইসি বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের এসেছিলেন ইটাহারে মোফাক্কেরুল ইসলামের সমর্থনে জনসভা করতে। সেখানেই তৃণমূলকে বিজেপির ‘বি’ টিম বলে মন্তব্য করেন তিনি। ওয়াইসির কথায়, ‘‘আপনি আমাদের বিজেপির ‘বি’ টিম বলেন। কিন্তু রেকর্ড বলছে তৃণমূল-ই বিজেপি-র ‘বি’ টিম। ২০০৫ সালে লোকসভায় আপনিই স্পিকারের মুখের উপর ফাইল ছুড়ে বলেছিলেন, কত লোক বাংলাদেশ থেকে বাংলায় আসছে দেখুন।’’ এরপর ওয়াইসির সংযোজন, ‘‘আজ বিজেপি বলছে উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশের মানুষ এসে থাকছে। দিলীপ ঘোষ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি মুসলমান বাংলদেশি। মমতা এখন তার বিরুদ্ধে বলছেন। কিন্তু একদা এই বিজেপি-কে তো তৃণমূলই বাংলায় ঢুকিয়েছিল।’’
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের পর হায়দরাবাদ কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল এ বার বাংলার ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথমে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে মিলিত ভাবে ভোটে ল়়ড়ার কথা হলেও পরে সেই সমঝোতা ভেঙে যায়। আপাতত রাজ্যে তিনটি জেলার ৬টি বিধানসভা আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিম। এরই মধ্যে প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করতেও শুরু করেছে মিম। বৃহস্পতিবার সেই সভা থেকেই মমতার উদ্দেশে একের পর আক্রমণ করেন মিম প্রধান ওয়াইসি।
সম্প্রতি বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে রাজ্যে ভোটে লড়তে এসেছে বলে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। সে প্রসঙ্গ টেনে ওয়াইসি বলেন, ‘‘গুজরাতে যখন রক্তের হোলি খেলা হচ্ছিল, তখন এই মমতাই ২০০২ সালের ৩০ এপ্রিল সমর্থন করেছিলেন বিজেপি-কে। সেই সমর্থনের জোরে মমতাকে অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁর সরকারে মন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন।’’ ওয়াইসির প্রশ্ন, ‘‘তা হলে আপনি বলুন মমতা, তখন বাজপেয়ীর সরকারের থেকে কত টাকা নিয়েছিলেন?’’ শুধু তা-ই নয়, টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে পরোক্ষে অভিষেককেও কটাক্ষ করেন ওয়াইসি। বলেন, ‘‘মমতা যদি বলতে পারেন বিজেপি-র থেকে আমরা কত টাকা নিয়েছি তা হলে ৯০ শতাংশ টাকা ভাইপোকে পাঠিয়ে দেব।’’
সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাঙ্ক প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘মুসলিমদের জন্য তিনি কোনও উন্নতি করেননি। তাদের ফুটবলের মতো ব্যবহার করে ভোটের খেলা খেলেছেন। আজ উনি বলছেন সব মুসলিম একজোট হয়ে ভোট দাও। কই আপনি তো হিন্দু ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে। একই কথা হিন্দুদের কেন বলতে পারছেন না?’’