মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
তাঁকে বার বার শো-কজ করে যে কোনও লাভ হবে না, নির্বাচন কমিশনকে এমন হুঁশিয়ারিই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ বার শো-কজ করলেও তাঁর জবাব যে একই হবে, সে বার্তাও দিলেন নির্বাচনী প্রচারমঞ্চ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী আদর্শবিধি ভঙ্গ করেছেন, এই অভিযোগ তুলে বুধবার মমতাকে শো-কজ নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। হুগলির তারকেশ্বরে গত ৩ এপ্রিল মমতা বিধিভাঙা মন্তব্য করেছেন বলে কমিশন ওই চিঠিতে জানিয়েছিল। বৃহস্পতিবার মমতা যদিও কমিশনের বিরুদ্ধে পাল্টা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করার অভিযোগ তুলেছেন।
হাওড়ায় বৃহস্পতিবার মমতা গিয়েছিলেন নির্বাচনী প্রচারে। ডোমজুড়ের সেই সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ১০ বার শো-কজ করেও লাভ নেই। একই জবাব দেব।’’ কমিশনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে মুসলিমদের যাঁরা পাকিস্তানি বলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ক’টা অভিযোগ হয়েছে? খালি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ?’’ বুধবার নোটিস পাঠিয়ে কমিশন মমতাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছিল। নচেৎ কমিশন কড়া পদক্ষেপ করতে পারে বলেও জানানো হয়। বৃহস্পতিবার মমতা পাল্টা হুঁশিয়ারিই দিয়েছেন কমিশনকে। তবে তাঁর তরফে লিখিত কোনও জবাব কমিশনে পৌঁছেছে কি না তা জানা যায়নি।
৩ এপ্রিল মমতা তারকেশ্বরের সভা থেকে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে মন্তব্য করেন। তার পরেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।’’ কমিশনের যুক্তি, ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী তাঁর প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে। তা নিয়েই নোটিস পাঠায় কমিশন।
বৃহস্পতিবারও বিজেপি-কে আক্রমণ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘সব হোটেলে ভর্তি ভর্তি টাকা নিয়ে এসেছে বিজেপি। টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছে। বিজেপি-র টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে অনেক গদ্দার। গদ্দার একটা, দুটো হয়, সকলে হয় না।’’ বৃহস্পতিবার মমতা যেখানে জনসভা করেন, সেই ডোমজুড় আসনে বিজেপি-র প্রার্থী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নাম না করে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন ‘‘আগের বার একটা গদ্দারকে এখান থেকে টিকিট দিয়েছিলাম। ও মানুষের টাকা মেরেছে। ও সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিল। আমাকে বলেছিল কারিগরি দফতর দিতে। যাতে আরও টাকা চুরি করতে পারে। ওকে জিজ্ঞাসা করুন, কত সম্পত্তি করেছে। বিদেশেও সম্পত্তি আছে ওঁর’’।