প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
মার্চের গোড়াতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় সমাবেশ করতে চলেছেন। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে আগামী ৭ মার্চ, রবিবার ব্রিগেডে সমাবেশ হবে মোদীর। তবে তার আগে আরও দু’টি সফর হতে পারে তাঁর। ইতিমধ্যেই আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মোদীর সফর চূড়ান্ত হয়েছে। সরকারি কর্মসূচিতে কলকাতায় এলেও সে দিন হুগলির সাহাগঞ্জে দলীয় সমাবেশ করবেন মোদী। এর পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ফের রাজ্যে আসতে পারেন। তবে এই ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারছেন না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তবে তাঁরা চাইছেন, সফর যদি সরকারি হয়, তা হলে সে দিনও যেন মোদী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেন।
রাজ্য বিজেপি-র ৫টি ‘পরিবর্তন যাত্রা’-র শেষে মার্চের প্রথম সপ্তাহে মোদীর উপস্থিতিতে বিজেপি ব্রিগেড সমাবেশ করবে বলে আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার ডিজিটাল। সেই সভাই হতে চলেছে ৭ মার্চ। সংসদে অধিবেশন শুরু হচ্ছে ৮ মার্চ। তার আগের দিনই রাজ্য আসতে পারেন মোদী। নীলবাড়ি দখলের লক্ষ্যে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে উঠেপড়ে লেগেছে তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। একের পর এক সফর করে চলেছেন জেপি নড্ডা, অমিত শাহ। সেই সঙ্গে মোদীও। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠান পুরোপুরি সরকারি হলেও এর পরে ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি হলদিয়ায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সূচনা করার আগে রাজনৈতিক জনসভাও করেছেন।
একটা সময় পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি মনে করেছিল বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ কমিশন ঘোষণা করার আগে রাজনৈতিক সমাবেশ করবেন না প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু হলদিয়ার জনসভা বুঝিয়ে দেয়, সেটা নয়। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার জন্য ভোটের প্রচার আটকে রাখতে চান না মোদী। এর পরে আগামী সোমবারের কর্মসূচির পরিকল্পনা হয়। এ বার সেই মতোই ২৮ ফেব্রুয়ারির দিকে তাকিয়ে রাজ্য বিজেপি। এর মধ্যে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ না হলেও যাতে আরও একটি জনসভা মোদী করেন তার উদ্যোগ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ চাইছেন এ বারের সমাবেশ হোক উত্তরবঙ্গে।
এখনও পর্যন্ত নড্ডা, অমিত ও মোদীর যে ক’টি কর্মসূচি হয়েছে তার মধ্যে কোচবিহারে ‘পরিবর্তন যাত্রা’-র সূচনা এবং মালদহে কৃষকদের নিয়ে নড্ডার ‘সহভোজ’ ও ইংরেজবাজারে রোড-শো ছাড়া সবই হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে উত্তরবঙ্গের তুলনায় দক্ষিণে বিজেপি-র ভোটপ্রাপ্তি ছিল কম। আর সেই কারণেই দক্ষিণে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজর বেশি। তবে উত্তরও যে গুরুত্বপূর্ণ তা কোচবিহারে গিয়ে রাজবংশী সমাজকে বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন অমিত। এ বার মোদীকে নিয়ে গিয়ে উত্তরকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সদ্য পেশ করা বাজেটে চা-শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা বলেছে। উত্তরবঙ্গের সড়ক ব্যবস্থার উন্নতিতেও বাজেট বরাদ্দ ঘোষণা করেছে। তার ‘ডিভিডেন্ড’ তুলতেই উত্তরবঙ্গে মোদীকে হাজির করতে চাইছে পদ্ম-শিবির।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে যে ৪টি ‘পরিবর্তন যাত্রা’ শুরু হয়েছে সেগুলি মার্চের প্রথম দু-এক দিনের মধ্যেই শেষ হবে। কলকাতা জোনের রথ সবে শুরু করেছে যাত্রা। বৃহস্পতিবার এর সূচনা করেছেন অমিত। সেটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা ঘুরে কলকাতায় ঢুকবে ফেব্রুয়ারির শেষ বা মার্চের একেবারে শুরুতে। আর সেই রথযাত্রার শেষটা ৭ মার্চ হবে ব্রিগেডে। সেই দিন অন্য চারটি রথের প্রতিনিধিত্বমূলক উপস্থিতিও থাকবে মোদীর সমাবেশে। রাজ্য বিজেপি নেতারা মনে করছেন, ব্রিগেড সমাবেশের আগেই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে যাবে। আর ব্রিগেড থেকে মোদীর হাত দিয়েই শুর হবে নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্বের প্রচার। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেও একটি ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল বিজেপি। উপস্থিত ছিলেন মোদী। সেই ভোটে আশাতীত সাফল্য পাওয়া বিজেপি এ বারও একই ভাবে শুরু করতে চাইছে।