মঙ্গলবার তমলুকের বিজেপি প্রার্থী হরেকৃষ্ণ বেরাকে দেখতে হাসপাতালে দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
দলীয় প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে হামলার মুখে পড়লেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী হরেকৃষ্ণ বেরা। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশেও অভিযোগ করেছে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, তমলুকের ভোটারদের সহানুভূতি কুড়োতেই নিজেদের প্রার্থীর উপর হামলার মিথ্যা অভিযোগ করছে বিজেপি। গোটা ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার তমলুক থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা।
বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় আগামী ১ এপ্রিল তমলুকে ভোট। মঙ্গলবার এই দফার নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিন। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রচারের মাঝেই ক্রমশই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সেই আঁচ এসে লাগল খোদ জেলা সদর তমলুকেও। বিজেপি-র দাবি, প্রচার সেরে ফেরার পথে সোমবার রাতে তমলুক হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকায় হরেকৃষ্ণকে মারধর করেছে তৃণমূলের লোকেরা।
মঙ্গলবার বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক জানিয়েছেন, তৃণমূলের হামলায় আহত হয়েছেন হরেকৃষ্ণ। তাঁকে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালের সিসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়েছে। হামলার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে হরেকৃষ্ণর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে ছুটে যান দিলীপ। এই হামলার তীব্র নিন্দাও করেন তিনি। তৃণমূলই যে এই হামলা করেছে, এমন অভিযোগও করেছেন দিলীপ।
বিজেপি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুলিশকে গোটা ঘটনার লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে এই হামলায় জড়িত কোনও দুষ্কৃতীকে এখনও পাকড়াও করা হয়নি বলেই দাবি তাদের। এই হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে নবারুণের নেতৃত্বে তমলুক থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মীরা।
নবারুণের দাবি, ‘‘বিজেপি প্রার্থী হরেকৃষ্ণ পেশায় চিকিৎসক। এলাকায় তাঁর যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। হরেকৃষ্ণর ভোটপ্রচারে এলাকার মানুষজনের ঢল নামছে। যা দেখে আতঙ্কিত হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল।’’ সেই কারণেই তাঁর উপর তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে বিজেপি। যদিও বিজেপি-র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। তমলুকের তৃণমূল নেতা চঞ্চল খাঁড়ার পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি এ বার তমলুকে হারবে। তাই ভোটারদের সহানুভূতি নিতেই প্রার্থীর ওপর হামলার মিথ্যে অভিযোগ আনছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তমলুক কেন্দ্রে ১ হাজারেরও কম ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়লাভ করেছিল বামেরা। কিন্তু, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূলের ঘাড়ে রীতিমতো নিঃশ্বাস ফেলেছে বিজেপি। পাশাপাশি, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক-সহ বেশ কিছু এলাকায় গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে শাসকদলের মধ্যে। তাই এই কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল যে কোনও দলের পক্ষেই যেতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।