Mamata Banerjee

Bengal Polls: নন্দীগ্রামে মমতাকে লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’, দলকে মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ তৃণমূল নেত্রীর

নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। মঙ্গলবার সকালে প্রথমে রেয়াপাড়ার কাছে এই ঘটনা ঘটে। তার পর মহম্মদবাজারেও তাঁকে ঘিরে একই ধ্বনি শোনা যায়। বিজেপি-র কর্মী, সমর্থকরাই মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ওই ধ্বনি দেন বলে অভিযোগ। কারণ তার কিছু ক্ষণ পর ওই এলাকাতেই পদযাত্রা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার জন্য সকাল থেকেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল রাস্তায়। তাঁরাই এই ধ্বনি দেন বলে অভ্যোগ। এই ধ্বনি শুনে তৎক্ষণাৎ মমতা নিজে যদিও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে আচমকা এই ঘটনায় সাময়িক ভাবে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ এবং মমতার নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন। তবে পরে সোনাচূড়ার সভায় দলীয় কর্মীদের মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ দেন তৃণমূল নেত্রী। এর আগে, নেতাজির জন্মদিনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে মমতাকে লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি ওঠে। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২১ ১৪:০৭
Share:

এ ভাবেই মমতার কনভয় ঘিরে ধরেন বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা।

নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। মঙ্গলবার সকালে প্রথমে রেয়াপাড়ার কাছে এই ঘটনা ঘটে। তার পর মহম্মদবাজারেও তাঁকে ঘিরে একই ধ্বনি শোনা যায়। বিজেপি-র কর্মী, সমর্থকরাই মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ওই ধ্বনি দেন বলে অভিযোগ। কারণ তার কিছু ক্ষণ পর ওই এলাকাতেই পদযাত্রা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার জন্য সকাল থেকেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল রাস্তায়। তাঁরাই এই ধ্বনি দেন বলে অভ্যোগ। এই ধ্বনি শুনে তৎক্ষণাৎ মমতা নিজে যদিও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে আচমকা এই ঘটনায় সাময়িক ভাবে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ এবং মমতার নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন। তবে পরে সোনাচূড়ার সভায় দলীয় কর্মীদের মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শ দেন তৃণমূল নেত্রী।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন নন্দীগ্রামে। সেখানে মমতা খোদ তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে সেখানে বিজেপি-র প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে প্রচারের জন্য রবিবার থেকে সেখানে রয়েছেন মমতা। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে রেয়াপাড়া থেকে নন্দীগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। তখনই তাঁর গাড়ি ও কনভয় ঘিরে বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন বলে জানা গিয়েছে।

ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে গোটা ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, নন্দীগ্রামমুখী রাস্তার এক পাশে সারি সারি লরি দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর এক দিক দিয়ে মমতার কনভয় এগিয়ে চলেছে। আর তার পিছনে পদ্ম-পতাকা হাতে নিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে চলেছেন এক দল লোক। তাঁদের কারও মাথায় গেরুয়া টুপি। কারও মাথায় আবার বাঁধা গেরুয়া ফেট্টি। কয়েক জনের হাতে আবার অমিত শাহে-র ছবি-সহ ‘এ বার আসল পরিবর্তন, এ বার বিজেপি’ লেখা পোস্টারও দেখা যায়।

Advertisement

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বিজেপি-র পতাকা হাতে নিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে দিতে কনভয়ের পিছনেও ছুটছেন কয়েক জন। আবার রাস্তা বরাবর বিজেপি-র পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেকে। মমতার কনভয়ের উদ্দেশে পতাকা নাড়াচ্ছেন তাঁরা। গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। গাড়ি থেকে নেমে এসে কনভয়ের পিছনে দৌড়তে থাকা গেরুয়া জামা পরিহিত লোকজনকে আটকান মমতার নিরাপত্তারক্ষীরা। এগিয়ে আসে পুলিশও।

তবে সে যাত্রায় কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও, মহম্মদবাজারে কনভয় পৌঁছলে, সেখানেও মমতাকে লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে। টেঙ্গুয়া হয়ে সোনাচূড়ার দিকে যখন কনভয় এগোচ্ছিল, তাঁর কনভয়কে ঘিরে ধরে ধ্বনি দিতে থাকেন একদল গেরুয়া কর্মী ও সমর্থক। তবে পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরাই পরিস্থিতি সামাল দেন। সেখান গাড়িতে চেপে সটান বেরিয়ে যান মমতা। পরে সোনাচূড়ার সভায় দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘মাথা ঠান্ডা রাখুন, কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। থাকবেন আপনারাই, আর আপনাদের দেখতে থাকবে রাজ্য পুলিশ। ভিন্ রাজ্যের পুলিশ অত্যাচার করছে। ভোট শেষে ভিন্‌ রাজ্যের পুলিশ থাকবে না। আর পাণ্ডাদের কী ভাবে বের করে দিতে হয় তা বাংলার মানুষ ভাল ভাবেই জানে।’’

মমতাকে ঘিরে এই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০১৯ সালের মে মাসে নৈহাটি যাওয়ার পথে একই ভাবে মমতার গাড়ির সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে শুরু করেন একদল লোক। সেই সময় মেজাজ হারান মমতা। নৈহাটির সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘গাড়ির সামনে কয়েক জন এসে গালিগালাজ করছে। সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা যেত। লোকগুলোকে চিনে রেখেছি।’’ ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না বলেও সে বার মন্তব্য করেন মমতা। তিনি যুক্তি দেন, ‘‘বাইরে থেকে এ সব কালচার তুলে আনা হচ্ছে। তোমার কালচার তুমি করো। আমার কালচার আমি করব। তুমি কে হরিদাসের দল? বাংলাটা বাংলাই থাকবে। এখানে আমরা ‘জয় হিন্দ’ বলব। ‘জয় বাংলা’ বলব।’’

সেই সময় মমতা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিকে ‘গালি’ বলে উল্লেখ করায় গেরুয়া শিবির থেকে কটাক্ষ উড়ে এসেছিল। ওই ধ্বনি শুনে মমতার রেগে যাওয়া নিয়ে নানা মন্তব্য করেছিলেন গেরুয়া নেতৃত্ব। তার পর এ বছর নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি-র প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতিতে মমতা মঞ্চে ভাষণ দিতে উঠলে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ভেসে আসে। তাতে বক্তৃতা না করেই মঞ্চ থেকে নেমে যান মমতা। এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে এই ধরনের ধ্বনি তোলা নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। যদিও বক্তৃতা না করে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়া নিয়ে মমতাকেই আক্রমণ করেন বিজেপি নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement