উত্তরবঙ্গের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত।
নন্দীগ্রামের লড়াইতে শেষমেশ জয়ের শিরোপা কে পাবেন, তা জানা যাবে আগামী ২ মে। তবে তার আগেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ওই আসনে পরাজিত হয়েছেন 'বেগম' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার উত্তরবঙ্গে ভোটপ্রচারে গিয়ে শুভেন্দুর আরও দাবি, কোচবিহার থেকে মমতার দলকে খালি হাতে ফিরতে হবে। এখনও পর্যন্ত দু’দফা মিলিয়ে যে ৬০টি বিধানসভা আসনে ভোট হয়েছে, তার মধ্যে ৫৫টিরও বেশি জিতে নিয়েছে তাঁর দল।
নীলবাড়ির লড়াইয়ের চতুর্থ দফায় উত্তরবঙ্গের কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের যথাক্রমে ৯ ও ৫ আসনে ভোট হবে আগামী ১০ এপ্রিল। তার আগে শনিবার মাথাভাঙার নিশিগঞ্জে এবং দিনহাটায় জনসভা করেন শুভেন্দু। মাথাভাঙ্গায় নিশিগঞ্জ সিটকি বাড়ি এলাকায় এবং দিনহাটায় সংহতি ময়দানে শুভেন্দুর সঙ্গে একমঞ্চে ছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। প্রসঙ্গত, মাথাভাঙ্গা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুশীল বর্মণ। শীতলকুচি আসনের লড়ছেন বরেনচন্দ্র বর্মণ। দিনহাটায় দাঁড়িয়েছেন নিশীথ প্রামাণিক এবং সিতাই কেন্দ্রে দীপক রায়কে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এঁরা সকলেই শুভেন্দুর জনসভায় উপস্থিত ছিলেন। উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে এসে শুভেন্দু বলেন, “আপনারা জানেন মাননীয়ার বিরুদ্ধে আমি নন্দীগ্রামের লড়াই করেছিলাম। ১ তারিখে অনেক ভোটে হেরে গিয়েছে বেগম। নন্দীগ্রাম থেকে পদ্ম ফুটিয়ে এই মাথাভাঙ্গার পবিত্র মাটিতে এসেছি। এই মাটিকে প্রণাম জানাচ্ছি।”
জনসভায় মমতা-সহ তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুভেন্দুর দাবি, “তৃণমূল দলটি প্রাইভেট লিমিটেডে পরিণত হয়েছে। ওই দলে একজনই সব। আর সবাই ল্যাম্পপোস্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর তোলাবাজ ভাইপো দু’জনে মিলে গোটা বাংলাকে কাটমানি, সিন্ডিকেট রাজ এবং তোলাবাজিতে ভরিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমি খুব অল্প বয়স থেকেই নির্বাচনে লড়ছি। দু’বার বিধায়ক এবং দু’বার সাংসদ হয়েছি। আমি মাটির গন্ধ বুঝি। এখনও পর্যন্ত দু’দফায় ভোট হয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে ভারতীয় জনতা পার্টি ৬০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৫৫টির বেশি আসনে ইতিমধ্যে জয়যুক্ত হয়ে গিয়েছে। কোচবিহার জেলায় তৃণমূলকে শূন্য হাতে ফিরতে হবে।”
মমতা ছাড়াও দিনহাটার তৃণমূল প্রার্থী তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও ছিলেন শুভেন্দুর নিশানায়। রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশে তাঁর তোপ, “উত্তরবঙ্গের কোনও উন্নয়ন করেননি রবিবাবু। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুঠ করেছেন।”
তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর অভিযোগ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রবীন্দ্রনাথ। তাঁর পাল্টা তোপ, “বাইরে থেকে এসে বিজেপি-র শিখিয়ে দেওয়া বুলি আওড়াচ্ছেন শুভেন্দুবাবু। উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন হয়েছে কী হয়নি, সেটা বিচার করবেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুটের ব্যাপারে তিনিই ভাল বলতে পারবেন। কারণ ৮টি জেলার দায়িত্বে নিজেই ছিলেন শুভেন্দু।”