জাঙ্গিপাড়ায় বিজেপি-র কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল সাংসদ-অভিনেতা দেবের রোড শো শেষ হতেই হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় বিজেপি-র কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার এই ঘটনায় জাঙ্গিপাড়ার রেনি গেট এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, জাঙ্গিপাড়ায় ভোটের আগে বিজেপি-ই অরাজকতার মাধ্যমে এলাকায় অশান্তি করার চেষ্টা করা করছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে জাঙ্গিপাড়া থানায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।
শনিবার জাঙ্গিপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে দেবের রোড শো হয়। সেই রোড শো রেনি গেটের কাছে পৌঁছলে তাতে বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি হেমন্ত সাঁতরার গাড়ি ঢুকে পড়ে। ওই গাড়িতে হেমন্ত ছাড়াও কয়েক জন ছিলেন। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন তাতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জাঙ্গিপাড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকার। তাঁর দাবি, “আমাদের গাড়ি পুরো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পার্বতীদির শাড়ি ধরে টেনে শ্লীলতাহানি করা হয়। হেমন্তদাকে টেনে বার করে পেটানো হয়েছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ করেছি। আশা করি তা এফআইআর হিসাবে নেওয়া হবে।”
ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভানেত্রী পার্বতী শীল। তাঁর দাবি, “খালিশানি হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভার কাজ দেখতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের মিছিল থেকে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। গাড়িতে সে সময় আমি এবং জাঙ্গিপাড়ার মণ্ডল সভাপতি ছিলেন। আমাদের গাড়ির সব কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। পিছনে আমাদের আরও গাড়ি ছিল। সেই গাড়ি এসে পড়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।’’
জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তমাল চন্দ বলেন, “দেবের মিছিলে ২০ হাজার লোক হয়েছিল। বিশাল মিছিল আসার সময় রেনি গেটের কাছে বিজেপি-র ১০-১৫ জন ওদের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। ওদেরকে সরিয়ে দিতে পুলিশকে বলা হয়েছিল। রাস্তায় ‘নো এন্ট্রি’ করার কথা বলা সত্ত্বেও মিছিলের মধ্যে বিজেপি গাড়ি ঢুকিয়ে দেয়।”
বিজেপি-র গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন জাঙ্গিপাড়ার বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা দাবি, “জাঙ্গিপাড়ায় দেবের মিছিলে পরিকল্পিত ভাবেই গাড়ি ঢুকিয়ে দেয় বিজেপি। তাতে দেবের গাড়ির পথ আটকে যায়। আমাদের ছেলেরা সেই গাড়িটিকে বার করে দেয়। বিজেপি-তে যে সমস্ত সিপিএমের হার্মাদ ঢুকেছে, তারা আমাদের গাড়ি-বাইক ভাঙচুর করেছে। ২টো বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি, আমাদের পতাকাও পুড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকারের নেতৃত্বে এবং নির্দেশেই জাঙ্গিপাড়ায় অরাজকতা তৈরি করে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে বিজেপি। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে জানাচ্ছি যাতে শান্তিতে ভোট দেওয়া যায়।”