ইস্তাহার প্রকাশ করছেন অমিত শাহ। —নিজস্ব চিত্র
বিজেপি-র ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতির বন্যা দেখে কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন এর জন্য অর্থের সংস্থান কোথা থেকে হবে। তবে অর্থের জন্য চিন্তা কাউকে করতে হবে না বলে আশ্বস্ত করলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। রবিবার সন্ধ্যায় বিধাননগরের ইজেডসিসি-তে সংকল্পপত্রের উদ্বোধনের আগেই অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানিয়ে দিলেন, তিনি বেনিয়া (ব্যবসায়ী)। অর্থের সংস্থানের বিষয়টি ঠিক করেই তবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমি বেনিয়া, তাই ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতি রূপায়ণের জন্য টাকার কথা আগেই ভাবা হয়েছে। তাই সোনার বাংলা গড়তে কোনও সমস্যাই হবে না।’’ নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বিজেপি-র ইস্তাহার নিয়ে সব প্রশ্নের জবাব যেন শুরুতেই দিয়ে রাখলেন এই গুজরাটি রাজনীতিক। সেই বক্তৃতায় নিজের ‘গুজরাতি বেনিয়া’ ইমেজের কথা স্মরণ করাতে ভুললেন না শাহ। বিজেপি এ বার ইস্তাহারের পোশাকি নাম রেখেছে ‘সোনার বাংলা সংকল্প পত্র’। আত্মপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই যে সংকল্প পত্র নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে সংবাদমাধ্যমে তা ভালই জানেন প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি। বিজেপির সংকল্প পত্রে যা রয়েছে তাতে বলাই যায় ‘কল্পতরু ইস্তাহারে’ ভর করেই রাজ্যের মানুষের ভোট চাইছে। কিন্তু রাজ্যে মানুষের কাছে এই বিপুল প্রতিশ্রুতি কী আদৌ গ্রহণযোগ্য হবে? সেই প্রশ্ন রয়েছে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের মনেও। সেই ভাবনা থেকেই বক্ততার শুরুতেই সব প্রশ্নের নিরসন করতে চেয়েছেন শাহ।
২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নিয়ে ৭৩টি আসনে জয় এনে দেওয়াই শাহের সাফল্যের সূচনা। তারপর সভাপতি পদে ছয় বছর এই ‘গুজরাতি বেনিয়া’ একের পর এক সাফল্য দিয়েছেন দলকে। ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদীকে দিল্লির মসনদে বসাতে তাঁর ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বড়। লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ১৮টি আসন জেতার পিছনেও তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্কই কাজ করেছিল। এ বার লক্ষ্য বাংলা দখল। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে বাংলার নির্বাচনের গুরু দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন কাঁধে। তাঁর পর্যবেক্ষণেই যে তৈরি হয়েছে এই সংকল্পপত্র তাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। শিক্ষা থেকে শিল্প, স্বাস্থ্য থেকে পরিকাঠামো, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পৃথক ভাবে নজর দেওয়ার কথা বলে ইস্তাহারে কল্পতরু হয়েছে শাহ। তাই কোনওরকম প্রশ্নের আগে নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন বেনিয়া বলেই আগে অর্থসংস্থান করেই পশ্চিমবঙ্গবাসীকে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।