প্রতীকী ছবি।
বিজেপি-র ইস্তাহারের প্রতিক্রিয়াতেও ‘বহিরাগত’ আক্রমণে বিধঁল তৃণমূল। ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন অমিত শাহ। নাম না করেও তাঁকে গুজরাতি বলে কটাক্ষ করে হিন্দি ভাষায় ইস্তাহার পাঠ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন। প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি-র ‘সোনার বাংলা’গড়ার প্রস্তাব নিয়ে। সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি-কে ‘জুমলাবাজ’-এর দল বলে আক্রমণ করেছেন সৌগত রায়।
রবিবার কলকাতায় বিজেপি-র ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইস্তাহারে ১৮ বছর বয়সে মহিলাদের এককালীন ২ লক্ষ টাকা, পিএম কিসান সম্মান নিধি প্রকল্পের ৩ বছরের বকেয়া, স্নাতকোত্তর পর্যন্ত মহিলাদের বিনা পয়সায় শিক্ষা, মহিলাদের বিনামূল্যে বাসে যাতায়াতের মতো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘সোনার বাংলা সঙ্কল্প পত্র’।
অমিত শাহ ইস্তাহার পড়েছেন হিন্দিতে। তিনি গুজরাতের বাসিন্দা। একই ভাবে বাংলায় বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ‘সোনার বাংলা’, অথচ তিনি বাংলার বাসিন্দা নন, বাংলায় কথাও বলতে পারেন না— এই জায়গা ধরেই টুইটারে খোঁচা দিয়েছেন ডেরেক। তাঁর কথায়, ‘এক জন গুজরাতের বাসিন্দা, মধ্যপ্রদেশের এক জনকে পাশে বসিয়ে পুরো হিন্দি ভাষণে ইস্তাহার প্রকাশ করে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন’।
ডেরেক যখন ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে আক্রমণ শানিয়েছেন, বিজেপি দলটাকেই জুমলাবাজ বা ভাঁওতাবাজ বলে আক্রমণ করেছেন সৌগত। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি একটা জুমলাবাজ দল। তাই ওদের ইস্তাহার বিশ্বাস করবেন না।’’ বিজেপি-র ইস্তাহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ নিয়ে সৌগত প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সিএএ কেন্দ্রীয় আইন। এটার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের কী প্রয়োজন?’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অসমে এনআরসি তৈরি হয়েছে। তাতে বাদ পড়েছেন ১৭ লক্ষ হিন্দু বাঙালি। নাগরিকত্ব দেওয়া তো দূর, তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পের দিকে ঠেলে দিয়েছে বিজেপি।’’
ইস্তাহারে আয়ুষ্মান ভারত কার্যকর করা, অন্নপূর্ণা ক্যান্টিন (যেখানে সস্তায় খাবার দেওয়া হবে), তফসিলি আদিবাসী পরিবারকে বছরে ৭ হাজার টাকা দেওয়ার মতো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। সৌগতর দাবি, এগুলি সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্প বা প্রতিশ্রুতির অনুকরণ মাত্র। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন মা ক্যান্টিনের অনুকরণে অন্নপূর্ণা, তৃণমূলের মাসে ৫০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মতো ৭ হাজার টাকার প্রতিশ্রুতির মতো বিষয়। পাশাপাশি ডেরেকের সুরে সৌগতও বহিরাগত ইস্যু নিয়ে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গুজরাতি অমিত শাহ, বাংলায় বলতে পারলেন না। হিন্দিতে বলে গেলেন। আমরা এর নিন্দা করছি।’’
সৌগতর সাংবাদিক বৈঠকের পর বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্যের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘সৌগত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। ওঁর এই অবস্থা দেখে খারাপ লাগছে। ওঁর মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কী ভূমিকা, তা ভুলে গিয়েছেন।’’