প্রতীকী ছবি।
যত বেশি বুথে ‘ওয়েবকাস্টিং’ হবে, সেই সব জায়গার ভোটে গোলমালের আশঙ্কা ততই কমবে বলে মনে করেন নির্বাচন-বিশেষজ্ঞেরা। গোলমালের আঁচ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপও করতে পারবে নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় এ বার সরাসরি সম্প্রচারিত ছবির মাধ্যমে সামগ্রিক ভোট-প্রক্রিয়ার উপরে নজর রাখতে ওয়েবকাস্টিংয়ের পরিধি অনেকটাই বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন জেলাশাসক এই বিষয়ে কমিশনের নির্দেশ রূপায়ণ শুরু করে দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের ‘সংবেদনশীল, উত্তেজনাপূর্ণ ও জটিল’ বুথগুলিতে ওয়েবকাস্টিংয়ের সুবিধা রাখতেই হবে। এই ধরনের বুথ-সংখ্যা অথবা মোট বুথের ৫০ শতাংশ— যেটা বেশি হবে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে সেই সংখ্যক বুথে। এর আগে শুধু ‘ক্রিটিক্যাল’ বা জটিল বুথগুলিতে এই বন্দোবস্ত থাকত। সে-দিক থেকে এ বার অনেক বেশি বুথ সরাসরি কমিশন-কর্তাদের নজরে থাকবে। ওয়েবকাস্টিং হলে কমিশন-কর্তা, মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর, জেলা নির্বাচনী অফিসার (ডিইও), রিটার্নিং অফিসার এবং বিশেষ পর্যবেক্ষকদের কার্যালয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট-প্রক্রিয়ার স্পষ্ট শব্দ-সহ ভিডিয়ো ছবি সম্প্রচারিত হবে।
আগেই ওয়েবকাস্টিং নিয়ে দরপত্র ডেকে পেশাদার সংস্থা বাছার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল কমিশন। টেন্ডারে নির্বাচিত সংস্থাকে দিয়েই সেই কাজ করাতে হচ্ছে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী অফিসারদের। এই পদ্ধতিতে একাধিক দিক থেকে ভোট-পরিস্থিতি ক্যামেরাবন্দি করার ব্যবস্থা থাকবে। সেই সব ‘লাইভ ফিড’ সংরক্ষণও করা হবে। অল্প আলোতেও ছবি তোলার ক্ষমতা থাকতে হবে ক্যামেরাগুলির।
কমিশনের খবর, ভোটে কোথায় গোলমাল হতে পারে, তার নিরিখে সংবেদনশীল, উত্তেজনাপূর্ণ এবং জটিল এলাকা বা বুথ চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা যেমন একটি মানদণ্ড, তেমনই ভোটারদের নানা ভাবে প্রভাবিত করা বা ভয় দেখানোর তথ্যকেও বিবেচনায় রাখা হয়। তবে এ বার এমন এলাকা বা বুথ বাছাইয়ে ২০১৬-র বিধানসভা ও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময়কার হিংসা-তথ্যকেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এমন এলাকা এবং বুথের মানচিত্র তৈরি করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি চালাচ্ছে কমিশন।
প্রথম দফার ভোটের আগেই সব মিলিয়ে ৪৯৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কমিশনের হাতে। প্রথম পর্ব পাঁচ জেলায় ৩০টি আসনের ১০,২৮৮টি বুথে ভোট হবে। সব বুথেই আধাসেনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন। তা ছাড়া এলাকায় টহলের কাজে বাহিনীকে ব্যবহার করতে হবে। কুইক রেসপন্স টিমেও রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ব্যবহার করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। পুলিশকর্তারা মনে করছেন, ‘রিজ়ার্ভ’ বাদ দিলেও প্রথম দফার ভোটে ব্যবহার করার জন্য অন্তত ৩৪,৬৫০ জন আধাসেনা পাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে বেশি বুথ ওয়েবকাস্টিংয়ের আওতায় থাকলে কমিশনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটা অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে।