প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র।
বাম-কংগ্রেস জোটের সিদ্ধান্তে ‘ধাক্কা’। শমসেরগঞ্জে কংগ্রেস তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার না করলে মুর্শিদাবাদ জেলায় সংযুক্ত মোর্চার বামপ্রার্থী ছাড়া কারও হয়ে ভোটে প্রচার করবে না বলে আপাতত সিদ্ধান্ত নিল জেলা সিপিএম।
শমসেরগঞ্জের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই ক্ষোভ বাড়ছিল সিপিএমের অন্দরে। সিপিএম নেতাদের বক্তব্য, জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শমসেরগঞ্জ আসনটি তাঁদেরই প্রাপ্য। কিন্তু কংগ্রেস সেখানে প্রার্থী দিয়ে জোট-ধর্ম মানেনি। শমসেরগঞ্জের ঘটনা দলের কাছে ‘বড় আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক নৃপেন চৌধুরী। রবিবার তাঁর উপস্থিতিতেই শমসেরগঞ্জে দলীয় অফিসে জেলা নেতৃত্ব বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, কংগ্রেস প্রার্থী না তোলা পর্যন্ত দলীয় কর্মীরা ওই সিদ্ধান্তই মেনে চলবেন। বৈঠকে উপস্থিত দলের প্রাক্তন সাংসদ, আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘‘আমরা দলের রাজ্য নেতাদের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। শমসেরগঞ্জ থেকে কংগ্রেস প্রার্থী না-তুললে কর্মীরা কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে জেলার কোথাও কোনও প্রচার করব না আমরা। এখনও সময় আছে। দেখা যাক, ওরা (কংগ্রেস) কী করে!’’
কংগ্রেস ও বাম জোটের শর্ত অনুসারে শমসেরগঞ্জ আসনটি তাঁদেরই প্রাপ্য বলে মনে করেন জেলা সিপিএমের নেতারা। সেইমতো তাঁরা সেখানে মোদাশ্বার হোসেনকেই প্রার্থী করেছেন। শনিবার ঘোষিত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, সেখানে কংগ্রেসও প্রার্থী করেছে রেজাউল হককে। ফলে একই আসনে জোটের দুই শরিক দলের দুই প্রার্থীর লড়াই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাম নেতাদের আশঙ্কা, এর প্রভাব পড়তে পারে জেলার অন্য আসনগুলিতেও। ইতিমধ্যেই যার ইঙ্গিত মিলেছে নওদা আসনে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “শমসেরগঞ্জে যা ঘটেছে, তাতে এই জেলায় জোট নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ভুল বার্তা যাবে। এই জোট হয়েছে রাজ্য পর্যায়ের আলোচনায়। তার পরেও এমন করা কংগ্রেসের ঠিক হয়নি।” শমসেরগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক ও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তোয়াব আলি বলেন, ‘‘আমরা জোট ফর্মুলায় শমসেরগঞ্জ আসন পেয়েছি। তৃণমূলকে হারাতে যৌথ সম্মতিতে একজনকে প্রার্থী করার জন্য কংগ্রেসের কাছে আবেদন করেও লাভ হয়নি। তবে যাই ঘটুক, সিপিএম শমসেরগঞ্জ থেকে প্রার্থী তুলবে না। তবে এমন চললে জোট করার কি দরকার ছিল!’’ কংগ্রেস অবশ্য শমসেরগঞ্জে প্রার্থী দিয়ে জোট ধর্ম ভেঙেছে বলে মনে করছে না। জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “জোটের বৈঠক হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে। সেখানে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমদের সামনেই কংগ্রেস শমসেরগঞ্জ আসন দাবি করে। শমসেরগঞ্জে কংগ্রেস যে প্রার্থী দেবে, তা-ও তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সিপিএম নেতারা এসব জানেন না। তাঁরা শমসেরগঞ্জের বিষয়ে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বললেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শমসেরগঞ্জে কংগ্রেসের প্রভাব যা তাতে জয় নিশ্চিত। বিষয়টি সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের জানা নেই বলেই জোট ভাঙার বিষয়ে কংগ্রেসকে তাঁরা দোষারোপ করছেন।”