রবিবার তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় যথাক্রমে ২৭ ও ৩৬ জনের তালিকা ঘোষণা করল বিজেপি। যার মধ্যে বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামাণিক, স্বপন দাশগুপ্তের মতো বর্তমান সাংসদরা যেমন রয়েছেন, তেমনই প্রত্যাশা মতো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতো তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসা নেতাদের তাঁদের পুরনো কেন্দ্রেই প্রার্থী করা হয়েছে। এক নজরে দেখে নিন, এই মোট ৬৩টি আসনে বিজেপি কাকে কোথায় টিকিট দিল।
কোচবিহারের ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে রবিবার ৭টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। এর মধ্যে মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, শীতলকুচি, সিতাই, দিনহাটা, তুফানগঞ্জে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীরা জেতেন। কোচবিহার উত্তর আসনটি দখল করেছিল ফরওয়ার্ড ব্লক। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের নিরিখে আবার মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, কোচবিহার উত্তর, দিনহাটা, তুফানগঞ্জে এগিয়ে ছিল বিজেপি। পিছিয়ে ছিল কোচবিহার উত্তর, শীতলকুচি কেন্দ্র ২টিতে।
আলিপুরদুয়ার জেলার ৫টি আসনের মধ্যে কুমারগ্রাম, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার, মাদারিহাট—৪টির প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। এর মধ্যে ২০১৬ সালে মাদারিহাটে বিজেপি-র টিকিটে জেতেন মনোজ টিগ্গা। বাকি ৩টি আসনই তৃণমূলের দখলে ছিল। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে আবার এই ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল বিজেপি।
গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী, কুলতলি কুলপি, রায়দিঘি, মন্দিরবাজার, জয়নগর সব কেন্দ্রগুলিই তৃণমূল দখল করে। গত লোকসভা ভোটেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে তৃণমূল।
ক্যানিং পশ্চিম, ক্যানিং পূর্ব, বারুইপুর পশ্চিম, মগরাহাট পূর্ব, মগরাহাট পশ্চিম, ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা কেন্দ্রগুলি ২০১৬ সালে তৃণমূলের ঝুলিতেই যায়। লোকসভা ভোটেও তৃণমূল এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে এগিয়েই ছিল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া, বিষ্ণুপুর, সোনারপুর দক্ষিণ, ভাঙড়, কসবা এই সব কেন্দ্রগুলি তৃণমূলের দখলে ছিল। যাদবপুর থেকে জেতেন সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। কিন্তু লোকসভা ভোটের নিরিখে এই সব বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে বিজেপি পিছিয়েই থেকেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার টালিগঞ্জ, বেহালা পূর্ব, মহেশতলা, বজবজ, মেটিয়াবুরুজ সব কেন্দ্রগুলিই ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের দখলেই ছিল। আর গত লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি এগুলির মধ্যে একটি কেন্দ্রেও লিড পায়নি।
হাওড়া জেলার হাওড়া উত্তর, হাওড়া মধ্য, হাওড়া দক্ষিণ, সাঁকরাইল, পাঁচলা এবং উলুবেড়িয়া পূর্ব গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের দখলে ছিল। এই সব কেন্দ্রগুলিতে লোকসভা ভোটেও বিজেপি রাজ্যের শাসক দলকে টপকাতে পারেনি।
হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া উত্তর, শ্যামপুর, বাগনান, উদয়নারায়ণপুর, ডোমজুড় তৃণমূলের দখলে ছিল। আমতা কেন্দ্রটিতে জেতে কংগ্রেস। তৃণমূলের টিকিটে জেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবারও ডোমজুড়ের প্রার্থী, তবে বিজেপি-র টিকিটে। লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি এই কেন্দ্রগুলির কোনওটিতেই লিড পায়নি। তবে ডোমজুড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে রাজীব ও তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণেন্দু ঘোষের মধ্যে।
হুগলি জেলার ৯টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া, হরিপাল, ধনেখালি, তারকেশ্বর, পুরশুড়া, আরামবাগ, গোঘাট এবং খানাকুল সব ক’টি কেন্দ্রেই ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের দখলে ছিল। আর গত লোকসভা ভোটে পুরশুড়া এবং গোঘাটে বিধানসভা এলাকায় এগিয়ে থাকলেও বাকিগুলিতে পিছিয়ে ছিল বিজেপি।