গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
‘নীলবাড়ির লড়াই’ নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের মঞ্চে সৌগত রায় ও বাবুল সুপ্রিয়র মধ্যে তরজা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার নবান্নকে ‘অভিশপ্ত বাড়ি’ বলেছিলেন বাবুল। সেই কথার প্রেক্ষিতে সৌগত বলেন, ‘‘বাবুল একটা পাগল।’’ শুক্রবার সৌগতর কথার উত্তরে ফের এক দীর্ঘ পোস্ট করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। লিখলেন, ‘একজন বয়স্ক মানুষ যখন চূড়ান্ত হতাশ হয়ে যান, তখন তিনি কাগজে এই ধরনের কথা বলেন’!
শনিবারই রাজ্যে শুরু হয়ে যাচ্ছে প্রথম দফার নির্বাচন। এ বারের বিধানসভা ভোটকে ‘নীলবাড়ির লড়াই’ শিরোনামে সামনে এনেছে আনন্দবাজার ডিজিটাল। সেই নিয়ে বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বৃহস্পতিবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। সেখানে তিনি রাজ্য সরকারের প্রধান দফতর নবান্নকে ‘অভিশপ্ত বাড়ি’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, ‘ক্ষমতায় এলে নবান্নকে গরিব মানুষের হাসপাতাল বা মনোরম একটি বৃদ্ধাশ্রম বা গ্রামগঞ্জের যে সব ছাত্র কলকাতায় পড়তে আসে, তাদের জন্য একটি ছাত্রাবাসে রূপান্তরিত করা হবে। তাতেই নীলবাড়িটির শাপমুক্তি হতে পারে’।
এই পোস্ট নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পাল্টা বাবুলকে ‘পাগল’ বলে উল্লেখ করেন সৌগত। তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘বাবুল একটা পাগল। বাবুলের কথায় কী এসে যায়! বাবুল কী ওঁর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি! ওঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে একটা জায়গার বিধায়ক পদপ্রার্থী করে দেওয়া হয়েছে। তাতেই বোঝা যায়, দলে ওঁর অবস্থান কী! ওঁর কথায় গুরুত্ব দিতে যাব কেন!’’
সৌগতর সেই কথার ভিত্তিতে শুক্রবার ফের একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করলেন বাবুল। সৌগতকে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘উনি কি জানেন আমি কেন লড়ছি? কারণ আমি নিজে থেকে বলেছিলাম যে আমি কোনও একটি তথাকথিত ‘শক্ত’ কেন্দ্রে লড়তে চাই’। দলে বাবুলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সৌগত রায়। তাঁর প্রশ্ন ছিল, কেন একজন সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করল বিজেপি? তার জবাবও দিলেন বাবুল। লিখলেন, ‘আমি লড়ছি কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন নির্মম মানুষ ও তাঁর সরকারকে উৎখাত করতে। লড়ছি একটি ‘মানসিকতার’ বিরুদ্ধে। সেটা কি’?
তৃণমূলের ‘গুন্ডারা’ তাঁর উপর ‘হামলা’ করেছিলেন বলেও শুক্রবারের পোস্টে উল্লেখ করেন বাবুল। অভিযোগ করেছেন, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটাও কথা বলেননি, উল্টে তাঁর বিরুদ্ধে ‘একের পর এক ভুয়ো কেস’ দিয়ে গিয়েছেন। বাবুলের পোস্টে উঠে এসেছে নারদা প্রসঙ্গও। লিখেছেন, ‘লোভ থাকলে তো সৌগতদার মতো নারদায় টাকা নিতাম আর কয়লা মাফিয়ার সাথে হাত মেলাতাম, যেমন ওনার বস, ভাইপো করেছেন’।
‘নীলবাড়ির লড়াই’ শব্দবন্ধ নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল বাবুলের। আনন্দবাজার ডিজিটালের এই বিভাগের লোগো তুলে ধরে বাবুল লিখেছিলেন, কেন এই নির্বাচনকে ‘নীলবাড়ির লড়াই’ বলা হচ্ছে, তিনি জানেন না। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘বিজেপি কি কখনও বলেছে যে, সরকার গড়ে নীলবাড়িটিকেই হেডকোয়ার্টার করবে?’ সেই সূত্রেই বাবুলের লেখায় নবান্ন প্রসঙ্গে এসেছিল অভিশপ্ত কথাটি। যার পর বাবুলকে ‘পাগল’ বলেছিলেন সৌগত। তৃণমূল সাংসলদকে পাল্টা ‘শ্রদ্ধা অর্জন’ করার পরামর্শ দিলেন বাবুল। লিখলেন, ‘নিজের এলাকায় ছাপ্পা ছাড়া জিততে পারবেন কি? একবার এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন তো’।